বিনোদন ব্রেকিং নিউজ

সুশান্ত মৃত্যুর ধোঁয়াশা কাটেনি

জুন মাসের ১৪ তারিখ নিজের বান্দ্রার বাড়িতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতকে। এই ঘটনায় গত দু’‌মাসের বেশি সময় ধরে বলিউড তো বটেই সারা দেশে হইচই চলছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হলেও সুশান্তের নিকটাত্মীয় এবং অনুরাগীরা এই ঘটনাকে সরাসরি খুন বলে অভিযোগ করেছেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট। সিবিআই বর্তমানে ঘটনা তদন্তে নেমেছে।
রবিবার ফের সিদ্ধার্থ, দীপেশ, নীরজ, কেশবকে জেরা করছে সিবিআই। তাঁদের ডিআরডিও গেস্ট হাউসে নিয়ে গিয়ে চলছে জেরা। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার জেরা করা হচ্ছে সিদ্ধার্থ পিঠানিকে। আর নীরজকে তৃতীয়বার। তাঁদেরকে আলাদা আলাদাভাবে বসিয়ে জেরা করা হচ্ছে বলে খবর। প্রশ্ন করা হয়, ১৪ জুন সকালে ঠিক কী হয়েছিল? সুশান্ত সিং রাজপুত তাঁর ঘরের দরজা বন্ধ করে ছিলেন। বারবার দরজা ধাক্কা দেওয়ার পর, ফোন করার পর বা কলিংবেল বাজানোর পরও তিনি দরজা খুলছিলেন না। আর সেজন্যই এক তালা–চাবি সারানোর মেকানিককে ডেকে আনা হয়। যে তালা খুলে দিতে পারবে।
সূত্রের খবর, সিদ্ধার্থ, নীরজ, দীপেশরা মুম্বই পুলিশকে যা বলেছিলেন, তার সঙ্গে সিবিআইকে যা বলছেন তারও মিল নেই। ইন্ডিয়া টুডে সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, সেই চাবিওয়ালার নাম মহম্মদ রফি শেখ। তিনি সুশান্তের বেডরুমের তালা ভেঙে প্রথম ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন ইন্ডিয়া টুডের সাংবাদিক। চাবিওয়ালা জানান, তাঁকে দরজার তালা ভাঙতে ডাকা হয়। তিনি বেডরুমের দরজার তালা ভাঙেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। সুশান্তের ঘরের দরজায় কম্পিউটারাইজড লক দেওয়া ছিল। সেটাই ছুরি এবং হাতুড়ি দিয়ে তিনি ভেঙেছেন বলে জানিয়েছেন ওই মেকানিক। তবে তালা ভাঙ্গার পরেই তাঁকে ভেতরের কিছু দেখতে দেওয়া হয়নি। তাঁকে চলে যেতে বলা হয়। তখন ঘটনাস্থলে তিন থেকে চারজন উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের কাউকেই তিনি চেনেন না।
রবিবার রিয়া চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠাবে সিবিআই বলে খবর। তবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করা হবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। শনিবারই সুশান্তের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে সিদ্ধার্থ, নীরজ, দীপেশ, কেশবদের নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে সিবিআই। ১৩ জুন ও ১৪ জুন ঠিক কীভাবে কী ঘটেছিল বা ঘটে থাকতে পারে, তা অনুসন্ধানের চেষ্টা করছে। এখানে চাবিওয়ালার বক্তব্য খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সিবিআই আধিকারিকরা। দরজার তালা ভাঙার পর তাঁকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আর তখন কোনও পুলিশও ডাকা হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন। পুলিশের উপস্থিতি ছাড়াই তালা ভাঙা হয়। যারা তখন উপস্থিত ছিলেন তারা কেউই ভয়ার্ত ছিলেন না বলেও ওই চাবি মেকানিক জানিয়েছেন।
এরপর সিবিআই আধিকারিকরা মুম্বইয়ের কুপার হাসপাতালের চিকিৎসকদের জেরা করতে পারেন বলে খবর। যারা ময়নাতদন্ত করেছিলেন সুশান্তের মৃতদেহের। একটি বড় প্রশ্নের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ঠিক কী দেখে সুশান্তের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন চিকিৎসকেরা, সেই সম্পর্কে বেশকিছু প্রশ্ন করা হতে পারে। সুশান্তের শরীরে বিশেষ করে চোখ, থুতনি, ঠোঁট, গলা এবং পায়ে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল কিনা তা জিজ্ঞাসা করা হতে পারে। এই ঘটনা আত্মহত্যা কিনা, সেই সম্পর্কেও জেরা করতে পারেন সিবিআই আধিকারিকেরা। হাসপাতালে আনার পরে কীভাবে রাখা হয়েছিল সুশান্তের দেহ, সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরার বন্দোবস্ত ছিল কিনা, কেন বেশি রাতে ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল, কেন করোনাভাইরাসের টেস্টিং রিপোর্ট আসার আগেই দেহ ময়নাতদন্ত করা হয়, কার অনুমতিতে এবং কোন সময় মৃত অভিনেতা দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়, এই সমস্ত প্রশ্ন করতে চলেছে সিবিআই বলে সূত্রের খবর।