করোনা আবহে সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা খেল কেন্দ্রীয় সরকার। যা এখন বিরোধীদের কাছে বড় অস্ত্র হয়ে দাঁড়াল। ঠিক কী বলেছে সুপ্রিম কোর্ট? এদিন শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘কড়া লকডাউন জারি করে দেশে অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি করেছে সরকার।’ অর্থাৎ আজ যা দেশের আর্থিক পরিস্থিতি তার জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারই দায়ী। বুধবার একটি মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।
বুধবার ঋণের ইএমআইয়ের উপর মোরাটোরিয়াম মামলার শুনানিতে কেন্দ্রীয় সরকারের বকেয়া সম্পর্কে নিজেদের অবস্থান এবং হলফনামা জমার বিলম্বের কারণ জানাতে বলে সর্বোচ্চ আদালত। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার খাচ্ছি কিন্তু গিলছি না পদক্ষেপ করায় ক্ষুব্ধ হয় সর্বোচ্চ আদালত। তখন সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ ভর্ৎসনা করে বলে, ‘আপনাদের (কেন্দ্রের) অবস্থান স্পষ্ট করে জানান। আপনারা বলেছিলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা আরবিআইয়ের জবাবের ভিত্তিতেই এগিয়ে চলেছি। তবে কী কেন্দ্র আরবিআইয়ের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে?’ ফলে চাপে পড়ে যায় কেন্দ্র।
আদালত সূত্রে খবর, করোনাভাইরাস লকডাউনের সময় ঋণের কিস্তির উপর স্থগিতাদেশের সুযোগ দেওয়া হয়। সেই মোরাটোরিয়াম পর্যায়ে অতিরিক্ত সুদ আদায়ের বিরুদ্ধেই সর্বোচ্চ আদালতে মামলা চলছে। ওই মামলার শুনানিতেই সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ কড়া সমালোচনা করে কেন্দ্রের। কারণ তারা নানাভাবে ঋণ নেওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চাপ দিতে থাকে বলে খবর।
এদিকে আরবিআই বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, সমবায় এবং ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণের কিস্তি পরিশোধের উপর গ্রাহকে ছ’মাসের ছাড় দেওয়ার অনুমতি দেয়। যার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৩১ আগস্ট। সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের হয়ে প্রতিনিধিত্বকারী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, মোরাটোরিয়ামের উপর কেন্দ্রের হলফনামা জমা করার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা জানানো হোক। জবাবে মেহতা হলফনামা জমা করার জন্য এক সপ্তাহের সময় চেয়ে নেন।
করোনা এবং তার জেরে লকডাউনে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এমআর শাহ বলেন, কেন্দ্রের এখন ‘ব্যবসা’ নিয়ে ভাবার সময় নয়। আবেদনকারীর পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিবল বলেন, ‘মোরাটোরিয়ামের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩১ আগস্ট। ১ সেপ্টেম্বরের পর থেকেই আমরা ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যাব। এই ঋণ অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হবে। এটা একটা বড় সংকট তৈরি করবে।’ তিনি মোরাটোরিয়ামের মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ করেন। তবে সলিসিটর জেনারেল তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতা করেন। তাই সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে আগামী ১ সেপ্টেম্বর।