পরিযায়ী শ্রমিকদের চিহ্নিত করে ১৫ দিনের মধ্যে তাঁদের দেশের বাড়িতে ফেরত পাঠানোর জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এমনকী করোনাভাইরাসের কারণে হওয়া লকডাউনের নিয়মভঙ্গের জন্য যে পরিযায়ী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে তা অবিলম্বে তুলে নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ফলে পরিযায়ী শ্রমিকদের কিছুটা স্বস্তি মিলেছে বলে খবর।
এদিন পরিযায়ী শ্রমিকদের চিহ্নিত করে তাঁদের তালিকা সুশৃঙ্খলভাবে তৈরি করার জন্য কেন্দ্র–রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্য একটি রূপরেখা তৈরি করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দক্ষতা নির্ধারণ করে কাজের ব্যবস্থা করার জন্য তথ্য সংগ্রহও করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি অশোক ভূষণ, সঞ্জয় কিষাণ কল এবং এমআর শাহের তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং এতদিন যে পরিযায়ী শ্রমিকদের অবহেলা করে চলছিল কেন্দ্র–রাজ্য তার যবনিকা পতন হল বলে মনে করা হচ্ছে।
পরিযায়ীদের জন্য রূপরেখা তৈরি করা এবং তাঁদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে আদালতে হলফনামা পেশ করার জন্য রাজ্যগুলিকে ৮ জুলাই পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার আদালতে জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই ১ কোটি পরিযায়ী শ্রমিককে ট্রেনে–বাসে ঘরে ফেরানো হয়েছে। তারপরেই বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ঘরে ফিরতে আগ্রহী বাকি শ্রমিকদেরও ১৫ দিনের মধ্যে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে৷ মামলায় কেন্দ্রের সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্য সরকারও তাদের বক্তব্য আদালতে পেশ করে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার জানিয়েছে, ৮ লক্ষের বেশি পরিযায়ী শ্রমিক ইতিমধ্যেই বাংলায় নিজেদের বাড়িতে ফিরেছেন। আরও ৬ লক্ষ ৮২ হাজার শ্রমিক ফিরতে চেয়ে নাম নথিভুক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি সঞ্জয় কিশন কল এবং বিচারপতি এম আর শাহকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ এর আগে আরও কয়েকটি নির্দেশ দিয়েছিলেন। অভিবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে ট্রেন বা বাসভাড়া না নেওয়ার জন্য এবং তাঁদের জন্য খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে তিন সদস্যের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল। এদিন কেন্দ্র–রাজ্যগুলিকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি অশোক ভূষণ বলেন, ‘প্রতিটি রাজ্যকে জানাতে হবে কোন রাজ্য থেকে কত লোক ফিরে এলেন এবং তাঁরা রাজ্যের কোন জেলায়, কোন গ্রামে রয়েছেন। এঁদের প্রত্যেকের রোজগারের ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে৷ তার জন্য প্রতিটি রাজ্যকে জেলা এবং ব্লকস্তরে পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করতে হবে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মধ্যে দিয়ে তাঁদের রোজগারের ব্যবস্থা করতে হবে৷ নাম নথিভুক্ত করা জরুরি৷ আমাদের দেখতে হবে, কোন রাজ্য কী কী পরিকল্পনা গ্রহণ করে৷’