গতবছর করোনা মহামারির মধ্যেই ধাক্কা দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’। মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গের মধ্যেই বুধবার আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। এই পরিস্থিতিতে ‘আমফান’–এর অভিজ্ঞতাকে মাথায় রেখেই ‘ইয়াস’–এর মোকাবিলা করতে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা–সহ বিভিন্ন জেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। উদ্ধারকার্যের জন্য তৈরি এনডিআরএফ। পানীয় জল, ফ্লাড সেন্টারে মানুষজনকে নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা–সহ একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। সবকিছু নিয়ন্ত্রণ হবে উপান্ন থেকে।
জেলাশাসক পি উলগানাথন সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিস্থিতি মোকাবিলায় সুন্দরবন ও উপকূলীয় অঞ্চলে প্রযুক্তির ব্যবহার করে হবে। যাবতীয় প্রস্তুতির মধ্যে তিনি টেলিযোগযোগে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। ২০২০ সালের আমফানের সময় টেলিযোগাযোগ এবং বৈদ্যুতিক পরিকাঠামো চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাই ত্রাণের কাজে প্রশাসনিক যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছিল।’ প্রাথমিকভাবে এক নিম্নচাপ তৈরি হবে বঙ্গোপসাগরে। তার পর সেটি উত্তর–পশ্চিম দিকে এগিয়ে ২৪ মে ঘূর্ণিঝড়ের আকার নেবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় অতিরিক্ত জেলাশাসক, তিন পুলিশ জেলার সুপার, মহকুমাশাসক, বিডিও, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক–সহ জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর, বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন জেলাশাসক। পরিস্থিতির মোকাবিলায় জরুরি সব দপ্তরের কর্মীরা এখন থেকেই বিভিন্ন কাজে নেমে পড়েছেন। কুলতলি, রায়দিঘি, গোসাবা এলাকায় নদী বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। উপকূলবর্তী এলাকার সব মানুষকেই ঝড়ের আগে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এরপর ওই ঝড় আরও শক্তিশালী হবে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায়। শক্তি বাড়িয়ে সেটি উত্তর–পশ্চিম দিকে এগোতে থাকবে। ২৬ মে সকালে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও বাংলাদেশ উপকূলের খুব কাছে চলে আসবে ঘূর্ণিঝড়। এদিন সন্ধ্যায় ওই তিন জায়গায় উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আপাতত ২টি সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে। একটি হল প্রবল বৃষ্টি। ২৫ মে থেকে উপকুলবর্তি এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হবে। তা ক্রমশ বাড়বে। সতর্কতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে সুন্দরবনের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে। মাইকিং করে মৎস্যজীবীদের সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার থেকেই কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, রায়দিঘি, কৈখালী,মৈপীঠ, বকখালি, মৌশুনি এবং পাথরপ্রতিমার বন্দর এলাকায় জোরকদমে চলছে মাইকিং।
