নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে ফের তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি। এবার নেতাজির জাল চিঠি নিয়ে সরগরম মহানগরী। কারণ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে ইন্ডিয়ান সিভিস সার্ভিস থেকে নেতাজির ইস্তফার যে চিঠিটি প্রদর্শিত হচ্ছে, সেটি ভুল। এখানে অভিযোগ, হাতের লেখা নেতাজির নয়, চিঠিতে বানান ভুল। ১৯২১ সালের ২২ এপ্রিল সিভিল সার্ভিসের চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। এই সংক্রান্ত যে চিঠিটি ভিক্টোরিয়ার নেতাজি সংগ্রহশালায় স্থান পেয়েছে, সেটি আদ্যন্ত ভুল বলে দাবি করলেন নেতাজির নাতি সুগত বসু। আর তাতেই ঘটেছে বিপত্তি।
গত ২৩ জানুয়ারি এই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে সভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে উঠে বক্তব্য রাখতে গেলে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। জয় শ্রীরাম বলে চিৎকার করে অপমান করা হয়। তা নিয়েও সরগরম হয়ে উঠেছিল রাজ্য–রাজনীতি। কারণ সেখানে উপস্থিত থেকেও প্রধানমন্ত্রী কোনও কথা বলেননি। এমনকী নীরব ছিলেন।
এবার ইতিহাসবিদ সুগত বসু (নেতাজি রিসার্চ ব্যুরোর চেয়ারম্যান) ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কিউরেটর জয়ন্ত সেনগুপ্তকে একটি চিঠি দিয়েছেন। তাতে তিনি অনুরোধ করেছেন, যেন এখনই ওই জাল চিঠিটি সরিয়ে নেওয়া হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করে সুগতবাবু চিঠিতে এও জানান যে, নেতাজির লেখা আসল চিঠিটি লন্ডনের ভারতীয় অফিসে সংগৃহীত। সেটা সেখানেই রাখা আছে। ভিক্টোরিয়ায় প্রদর্শিত চিঠিটির হাতের লেখা নেতাজির নয়। চিঠিটিতে ‘সার্ভেন্ট’ বানানটিও ভুল। তাঁর মা, নেতাজির ভ্রাতুষ্পুত্র কৃষ্ণা বসুর ‘ইতিহাসের সন্ধানে’ বইয়ে আসল চিঠিটি ছাপানো আছে। তাঁরা লন্ডন থেকে নেতাজির পদত্যাগের চিঠিটি সংগ্রহ করেছিলেন।
ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে প্রশ্ন তোলেন, ‘নেতাজির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী এসে দেশের অন্যতম সেরা নায়ককে সম্মান দিলেন যে অনুষ্ঠানে, সংগ্রহশালা উদ্বোধন করলেন, তার গবেষণা কি আরও একটু যত্ন নিয়ে করা যেত না? নেতাজিকে নিয়ে এত বড় ভুল হওয়া একেবারেই মেনে নিতে পারছি না।’ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল অবশ্য এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।