রাজ্য

বাংলায় জরুরী–অবস্থা জারির দাবি বিজেপি সাংসদদের

রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্যের দুই বিজেপি সাংসদ। বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ বর্মন আজ দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে বিজেপি কার্যকর্তা খুনে একদিকে যেমন সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন, তেমনই ফের একবার রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের পক্ষে সওয়াল করলেন।
রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের জন্য কেন কেন্দ্রের কাছে দরবার করছে? রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের বাকি আর ১০ মাস। ঠিক তারই আগে থেকে কখনও রাজ্যপালের কাছে, কখনও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে, আবার কখনও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এই দরবার করা হচ্ছে। রাজ্য বিজেপি কী এটাই চাইছে যে, এই রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে তারপর বিধানসভা ভোট হোক?
সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপি নেতারা চাইছেন, পুলিশ–আমলা থেকে শুরু করে সবাই তৃণমূলের দালালি করছে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, আইনশৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতি ঘটেছে, বিজেপি’‌র বহু কার্যকর্তা খুন হয়েছেন এবং বহু কর্মী ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা বাড়িছাড়া। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ ছাড়া আর কোনও বিকল্প পথ নেই।
তবে রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ আবার মনে করছে, ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করলে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুকূলেই যাবে। বিধানসভা নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এখন কোণঠাসা। তাই ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে তাঁকে শহিদ বানানোর কোনও দরকার নেই। রাজ্যে নেতৃত্বের এই বক্তব্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আবার একমত নয়।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে দিল্লিতে রাজ্য–কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের যে ৪ দিনের বৈঠক ছিল, তাতে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। ঠিক হয়েছে, চলতি আগস্ট মাসেই এই বিষয় নিয়ে ফের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বসবেন। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সূত্রে খবর, রাজ্যপাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের পক্ষেই সওয়াল করেছেন তিনি। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেছেন রাজ্যপাল।
কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছে, রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের কারণ, সব বিরোধী দল এককাট্টা হয়ে একই দাবি করছে। কোনও রাজ্যে যদি ন্যূনতম সুযোগ–সুবিধা না থাকে, তবে সেই সরকারের থাকার যৌক্তিকতা কোথায়? শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব বিরোধীদলের এককাট্টা অভিযোগকেই এবার হাতিয়ার করতে চাইছে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব।