সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার মধ্যে মহাকাশ ভ্রমণের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। তাঁরা দাবি করছে, বিশ্বের আর পাঁচটা পর্যটন কেন্দ্রের মতো, মহাকাশেও ঘুরিয়ে আনা সম্ভব। এদের মধ্যে অন্যতম ধনকুবের রিচার্ড ব্যানসনের সংস্থা ভার্জিন গ্যালাকটিক। তাঁদের তৈরি ইউনিটি রকেটে চড়ে মহাকাশের দ্বারপ্রান্ত থেকে ঘুরে এসেছেন স্বয়ং রিচার্ড ব্যানসন, তাঁর সঙ্গে আরও পাঁচজন আরোহী মহাকাশ অভিমুখে উড়ে যান।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমার-আপনার মতো সাধারণ মানুষজনও কি মহাশূন্যে বেড়াতে যেতে পারবো? উত্তরে উঠে আসছে আশার আলো। কারণ, ইতিমধ্যেই কয়েকজন পর্যটক মহাকাশে ঘুরে এসেছেন। সাতজন ধনী ব্যক্তি বেড়াতে গিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনেও। তাই, আগামী দিনে সাধারণ মানুষও মহাকাশ পর্যটনে অংশ নিতে পারবেন।
শুরু হয়েছে মহাকাশ ভ্রমণের প্রতিযোগিতা
ব্রিটিশ ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসন সম্প্রতি তার কোম্পানি ভার্জিন গ্যালাকটিকের কথা তো আগেই জানালাম। এরপর আসছে অনলাইন সুপারমার্কেট অ্যামাজনের মালিক জেফ বেজোসের নাম। তাঁর তৈরি স্পেস কোম্পানি ব্লু অরিজিন। চলিতি মাসেই তাদের নিজস্ব রকেটে করে মহাকাশে যাওয়ার কথা রয়েছে জেফ বজেসের। আরেক প্রযুক্তি ব্যবসায়ী ইলন মাস্ক মহাকাশে যাওয়ার জন্য তাঁর স্পেস এক্স কোম্পানি থেকে কম খরচে মহাকাশে যাওয়ার জন্য রকেট তৈরির চেষ্টা করছেন। ফলে অচিরেই সাধারণ মানুষ মহাকাশে ছুটি কাটিয়ে আসতে পারবেন। তবে যদি পকেট আপনার সাথ দেয়।
মহাকাশযানের মহড়া
রিচার্ড ব্র্যানসন বলেছেন, এই পরীক্ষামূলক ফ্লাইটের মধ্য দিয়ে মহাকাশে পর্যটনের এক নতুন যুগের সূচনা হল। কিন্তু নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা বলছেন অন্য কথা। তাঁরা বলছেন, রিচার্ড ব্র্যানসন যেখানে গেছেন সেটা তো মহাকাশের অগভীর অংশ। সেখান থেকে মহাকাশ শুরু হয়েছে মাত্র। তিনি গেছেন ৫০ মাইল দূরে। পৃথিবীর একটু উপরে। তো সেটাকে মহাকাশ পর্যটন বলা যায় না। নাসা বলছে প্রকৃত মহাকাশের সূচনা ওই অঞ্চল থেকেই শুরু হয়, তবে পুরোপুরি মহাকাশ শুরু হয় পৃথিবীর ৬২ মাইল উপর থেকে। আবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস পৃথিবী থেকে আড়াইশো মাইল উপরে অবস্থান করে।
মহাকাশ ভ্রমণের খরচ কত?
ভার্জিন গ্যালাকটিক এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬০০ টিকিট অগ্রিম বিক্রি করেছে। যার দাম সিট প্রতি আড়াই লাখ ডলার। আবার স্টিভ বোজেসের সংস্থা ব্লু অরিজিন কয়েকশ টিকিট বিক্রি করে ফেলেছে, যার দাম দুই লাখ মার্কিন ডলার। ফলে বোঝাই যাচ্ছে এই ভ্রমণ সাধারণ মানুষের জন্য নয়। বিত্তশালী ও ধনকুবেররাই আপাতত মহাকাশে বেড়াতে যেতে পারবেন।
কী কী দেখবেন মহাকাশে?
পৃথিবীটা যে গোল সেটা মাত্র ৫০ থেকে ৭০ মাইল উপরে গেলেই দেখতে পাওয়া যায়। পৃথিবীর বৃত্তাকার রেখা তখন স্পষ্ট দেখা যায়। এটা একটা অপূর্ব সুন্দর দৃশ্য। চোখের সামনে গোটা পৃথিবী ভাসছে মহাশূন্যে। আবার মহাকাশের রঙ উপভোগ করতে পারেন। যেমন, পৃথিবী থেকে আমরা আকাশের যে নীল রঙ দেখতে পাই, সেটা উধাও হয়ে যাবে। সেখানে মহাকাশ নিকষ কালো। আর আছে ভরশূন্য থাকার অভিজ্ঞতা। সেখানে আপনি খুব সহজেই হাঁটতে পারবেন, লাফ দিয়ে অনেক উঁচুতে উঠে যেতে পারবেন, পারবেন ভেসে বেড়াতে। কোনো কিছুর সাথেই তো এসবের তুলনা হয় না।
You must be logged in to post a comment.