জেলা ব্রেকিং নিউজ

ছেলের সামনে মায়ের খুলি উদ্ধার

অভিযুক্ত ছেলে শেখ নয়নের উপস্থিতি বুধবার বাড়ির মধ্যে মাটি খুঁড়ে মায়ের কঙ্কাল মিলল পূর্ব বর্ধমানের হাটুদেওয়ানে। বছর আড়াই আগে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান শেখ নয়ন ওরফে শেখ সাইদুলের মা সুকুরানা বিবি। তারপর বহু জায়গায় খোঁজাখুজির পরেও মাকে না পেয়ে বড় ছেলে শেখ কিসমত ওরফে রাজা বর্ধমান থানায় নিখোঁজ ডাইরি করেন।

২০১৯ সালের জানুয়ারী মাসে সুকুরানা বিবি ছোট ছেলে নয়নের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। বড় ছেলে কিসমত বহু জায়গায় খোঁজাখুজি করেও মায়ের হদিস পায়নি।
বর্ধমান শহর লাগোয়া হাটুদেওয়ান পিরতলার ক্যানেলপাড় এলাকায় বাড়ি সুকুরানা বিবির ছেলে শেখ নয়নের। সেখানেই সুকুরানা বিবি থাকতেন।

সোমবার নয়নের বিরুদ্ধে মাকে খুন করে বাড়ির মধ্যে পুঁতে রাখার অভিযোগ করে নয়নের স্ত্রী সুকুরানা। বছর দুয়েক আগে নয়নের বিয়ে হয় পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের এরুয়ার গ্রামে। মাস চারেক আগে নয়নের স্ত্রী সুকুরানা স্বামীর সঙ্গে অশান্তি হওয়ায় বাবার বাড়ি চলে যায় তার সাত মাসের শিশুকন্যাকে নিয়ে। গত সোমবার নয়নের দাদা শেখ কিসমত ও বৌদি মিলি বিবি ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি এরুয়ার গ্রামে যান ছোট বৌমাকে ফিরিয়ে আনার জন্য। কিন্তু সুকুরানা ফিরতে অস্বীকার করে। কারণ তাকে খুন করে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে তার স্বামী শেখ নয়ন। তখনই সুকুরানা শাশুড়ীকে খুন করে বাড়িতে পুঁতে রাখার বিষয়টি বলে কিসমতকে।

এরপর দাদা শেখ কিসমত মঙ্গলবার সকালে এলাকার তৃণমূল নেতা শেখ জামালকে গোটা বিষয়টি জানায়।তারপর অভিযুক্ত নয়নকে তৃণমূল পার্টি অফিসে আটকে রেখে বর্ধমান থানায় জানানো হয়। পুলিশ শেখ নয়নকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই সে কবুল করে।কিসমত ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় খুনের নালিশ জানায়। মাকে খুন করে পুঁতে বাড়ির ভিতর সিমেন্ট দিয়ে বাঁধিয়ে দেয় গুণধর ছেলে নয়ন। সেখানে নয়ন নিয়মিত ধূপ জ্বালাতো।

বুধবার কোর্টের অর্ডার নিয়ে অভিযুক্ত শেখ নয়নকে নিয়ে গিয়ে মাটি খুঁড়ে নরকঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। ঘন্টাখানেকের বেশী সময়ে মেঝের মাটি খুঁড়ে মাথার খুলি,হাড়গোড় উদ্ধার হয় নয়নের ঘর থেকে। মাটি খোঁড়া উদ্ধারের সময় সারাক্ষণ একজন আদালতের নির্দেশে ম্যাজিস্টেট পর্যায়ের আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন ঘটনাস্থলে। বড়ছেলে শেখ কিসমত জানান মা প্রায় সময় ধর্মস্থান যেমন পাথরচাপরি সহ বিভিন্ন জায়গায় চলে যেত।এই নিয়ে মায়ের সঙ্গে ভাইয়ের অশান্তি হত। ভাই চাইতো মা যেন কোথাও না যায়।তাছাড়া মা ছোট ভাই নয়নকেই বেশি ভালবাসতো।আমি বললেও আমার কাছে না থেকে নয়নের বাড়িতেই থাকতে বেশী পছন্দ করতো মা।তিনি ভাইয়ের কঠোর সাজা দাবী করেন। পুলিশ উদ্ধার হওয়া খুলি ও হাড়গোড় ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজের পুলিশ মর্গে।এদিন অভিযুক্তকে বর্ধমান জেলা আদালতে পেশ করে বর্ধমান থানার পুলিশ।