গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চাঁদে পৌঁছনোর আগেই ইসরোর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ভারতের ‘চন্দ্রযান ২’–এর সঙ্গে। তারপর তার সঠিক খোঁজ দিয়েছিলেন চেন্নাইয়ের টেকি। সেই শানমুগা সুব্রহ্মণ্যন এবার প্রজ্ঞান রোভারের খোঁজ দিলেন। ধরেই নিয়েছিলেন প্রজ্ঞান রোভার ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। চন্দ্রপৃষ্ঠে সেই ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করতে চাঁদের একটার পর এক ছবি ঘেঁটে শুরু করেছিলেন গোয়েন্দাগিরি। সেই অক্লান্ত পরিশ্রমে, বিগত কয়েক মাসের অনুসন্ধানের পর অবশেষে রোভারেরও খোঁজ দিলেন ওই তামিল টেকি যুবক।
জানা গিয়েছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ইসরো। মহাকাশ গবেষণায় উৎসাহী চেন্নাইয়ের তামিল যুবক শানমুগা সুব্রহ্মণ্যন এর আগে ল্যান্ডার বিক্রমের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান দিয়েছিলেন। এবার তিনিই প্রজ্ঞানের খোঁজ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার একাধিক পোস্টে লিখেছেন, সঠিকভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করতে না পারার কারণে চন্দ্রযান ২–এর বিক্রম ল্যান্ডারের পেলোডস ভেঙে যায়। কিন্তু রোভার প্রজ্ঞান এখনও অক্ষত রয়েছে। বিক্রম ল্যান্ডারের কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে, কয়েক মিটার পথ পাড়িও দিয়ে ফেলেছে। চন্দ্রপৃষ্ঠে রোভারের সেই পরিক্রমা ট্র্যাক করেছেন চেন্নাইয়ের টেকি।
ইসরোর চেয়ারম্যান কে সিবান সংবাদসংস্থা আইএএনএস–কে জানান, ‘আমরা তাঁর (শানমুগা) সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমাদের বিশেষজ্ঞরাও বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষণ চালিয়ে যাচ্ছেন।’ শানমুগা একটি টুইটে দাবি করেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে কমান্ডগুলি ল্যান্ডারের কাছে সঠিকপথে পাঠানো হয়নি। তা হলে ল্যান্ডার কমান্ডগুলি গ্রহণ করতে এবং রোভারের কাছে সেগুলোকে রিলে করতে পারত। তবে পৃথক সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু কোনও কারণে ল্যান্ডার পৃথিবীর সঙ্গে ফের যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়নি।’ একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে চেন্নাইয়ের এই টেকি জানান, চন্দ্রযান–২–এর প্রজ্ঞান রোভারের গতিবিধি ট্র্যাক করতে নাসার আইএসআইএস–৩ ইউএসজিএস সফটওয়্যার ব্যবহার করেন। তাঁর এই ফাইন্ডিংয়ের বিশদ নাসা ও ইসরোর সঙ্গে শেয়ার করেছেন শানমুগা।
উল্লেখ্য, গত ৭ নভেম্বর চন্দ্রযান–২–এর ল্যান্ডার বিক্রমের চাঁদের মাটি স্পর্শ করার কথা ছিল। কিন্তু তার ঠিক কয়েক মুহূর্ত আগেই তার সঙ্গে সমস্তরকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সংস্থার। তার প্রায় আড়াই মাস পরে সেই ব্যর্থতা মেনে নেওয়া হল সংস্থার পক্ষ থেকে। ইসরোর চন্দ্রযান–২ মিশনের তিন মাস পর বিক্রমের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ দিয়েছিলেন শানমুগা। ৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে নাসার পক্ষ থেকে সেই ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। নাসার ছবির সাহায্য নিয়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করেছিলেন চেন্নাইয়ের এই প্রযুক্তিবিদ।
