জেলা

যৌনকর্মী থেকে হেরোইনের মোক্ষীরানী ময়না

যৌনকর্মী থেকে মাদক কারবারের মোক্ষীরানী। ঝুপড়ি থেকে সুদৃশ্য অট্টালিকার মালকিন। নামে, বেনামে বিলাসবহুল গাড়ি। পেটের টানে দেহব্যবসায় নেমে ময়না সাহা ১০ বছরের মধ্যেই হয়ে উঠেছিল শিল্পাঞ্চলের হেরোইন কারবারের অন্যতম কিংপিন।

ময়নার বদলে যাওয়া জীবন–বৃত্তান্ত সিনেমাকেও পিছনে ঠেলে দেয়। কুলটির লছিপুরের নিষিদ্ধপল্লি থেকে মাদক কারবারের হাতেখড়ি হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিয়ামতপুর, কুলটি থেকে বার্নপুর, আসানসোল সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে ময়নার র‌্যাকেট। ময়নার পরিচয় এখন ‘হেরোইন রানি’। সেই ময়না পুলিশের ‘খাঁচা’য় বন্দি। কুলটির নিয়ামতপুরে ইস্কো রোডের বাড়ি থেকে হেরোইন–সহ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‌মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চলছে। একাধিক বড় মাদক কারবারি গ্রেপ্তার হয়েছে।’‌ স্থানীয় সূত্রে খবর, ১০ বছর আগে নদীয়া জেলা থেকে ছোট্ট মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে লছিপুর এলাকার চাবকা নিষিদ্ধপল্লিতে এসেছিল ময়না। দেহব্যবসায় অন্যের উপরে ভরসা করে ব্যবসা চালাতে হতো। তাই কিছুদিন পর এলাকার ডাকাবুকো দিলীপ সাহার ঘর ভাড়া নিয়ে শুরু করে স্বাধীনভাবে দেহব্যবসা। পরে দিলীপের ছেলে গোপালকে বিয়ে করলেও ব্যবসা চালিয়ে যেতে থাকে।

নিষিদ্ধপল্লিতেই তার মাদক কারবারের হাতে খড়ি। তারপর হেরোইন কিনে পুরিয়া করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি শুরু করে। ধীরে ধীরে সেই কারবার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। একে মহিলা, তার উপর দেহ ব্যবসায়ী। তাই ময়নার কারবারও বাড়তে থাকে বিদ্যুৎ গতিতে। কৌশলে প্রতিদ্বন্দ্বীদের টেক্কা দিতে থাকে সে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মুর্শিদাবাদের লালগোলা থেকে প্রচুর পরিমাণে হেরোইন আনার ব্যবস্থা করে ময়না। সাপ্লাই লাইন ঠিক হতেই সে বিভিন্ন জায়গায় এজেন্ট রেখে ব্যবসা শুরু করে। নিয়ামতপুর, আসানসোলের গোপালপুর, মনোজ, কুলটি সর্বত্র সে এজেন্ট রাখে। বদলাতে থাকে তার চালচলন। শুরু হয় দামি গাড়িতে যাতায়াত। বছর খানেক আগে চবকা থেকে চলে যায় অট্টালিকায়। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে পুরো কারবার। মাস ছয়েক আগে এক্সইউভি গাড়ি কেনে। তবে তাল কাটে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বিশেষ অভিযানে।