লিড নিউজ

শচীন–সহ দুই মন্ত্রীকে অপসারিত করল কংগ্রেস

কোনও আপোসের রাস্তায় হাঁটল না কংগ্রেস। বরং কঠিন পরিস্থিতিতে আরও কঠিন সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস। ফলে জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে এখন যা খুশি ঘটতে পারে। তারই ইঙ্গিত পাওয়া গেল মঙ্গলবার। বিদ্রোহের শাস্তি দেওয়া হল কংগ্রেসের তরুণ তুর্কি নেতা শচীন পাইলটকে। রাজস্থানে রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেই তাঁর পদ কেড়ে নিল কংগ্রেস। উপ–মুখ্যমন্ত্রী, প্রদেশ সভাপতি—দুটি পদ থেকেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল। এমনকী শচীনের সমর্থনে বিদ্রোহে যোগ দেওয়া আরও দু’‌জন মন্ত্রীকেও তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোবিন্দ সিংকে রাজস্থান কংগ্রেসের নতুন প্রদেশ সভাপতি করা হয়েছে।
কেন এমন হল?‌ দলীয় সূত্রে খবর, সোমবার তাঁর ক্ষমতা দেখিয়েছেন অশোক গেহলট। দলের ১০৭ জন কংগ্রেস বিধায়কের মধ্যে ১০০ জন রয়েছেন তাঁর সঙ্গে। নিজের বাসভবনে ডাকা এক জরুরি বৈঠকে যোগ দিয়ে ওইসব বিধায়করা গেহলটকে আশ্বস্ত করেছেন। কিন্তু তার পরেও সংকট কমছে না রাজস্থানে। কারণ এবার মারাত্মক দাবি করে বসেছেন শচীন পাইলট। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী ও রাজস্থান কংগ্রেসের প্রেসিডেন্টে দাবি করেছেন, গেহলটকে সরিয়ে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদ দিতে হবে। দলের কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে তাঁর দাবি কথা জানিয়েছেন শচীন বলে খবর।
এদিনই রাজস্থানের রাজ্যপাল কলরাজের সঙ্গে দেখা করেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। শচীন পাইলট গেহলট সরকার ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিলেন বলে মঙ্গলবার অভিযোগ করেছেন কংগ্রেসের মুখ্য মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা। রাজস্থানে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শীর্ষ নেতা অজয় মাকেনকে মরুরাজ্যে পাঠিয়েছিল হাইকম্যান্ড। নিজের অবস্থান থেকে সরে এসে ফের দলীয় শৃঙ্খলা মানার জন্য শচীনকে সময় দিয়েছিল কংগ্রেস। দলের তরফে বলা হয়েছে, রাজস্থানে সরকার ফেলতে বিজেপি’‌র পাতা ফাঁদে পা দিয়েছেন শচীন।
মঙ্গলবার কংগ্রেস বিধান পরিষদীর দলের বৈঠকে যোগ দেননি শচীন। দিল্লির নেতারা মিটমাট বা আলোচনার দরজা খোল রয়েছে বললেও ঘাড় কাত করতে রাজি নন শচীন। সোমবারও একটি বৈঠক ডেকেছিলেন অশোক গেহলট। সেই বৈঠকেও যোগ দেননি শচীন–সহ মোট ১৬ বিধায়ক। হুইপ জারি করে সব কংগ্রেস বিধায়কদের সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। উপযুক্ত কারণ ছাড়া উপস্থিত না থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিল শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে সেই বৈঠকে যোগ দেননি শচীন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে শচীনের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলতে থাকেন রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, আহমেদ প্যাটেল, পি চিদম্বরম এবং কে সি বেণুগোপালের মতো নেতা। তাতেও বাগে আসেননি শচীন। তখন পরিস্থিতি বুঝে নিতে বিধায়কদের ডেকে সংখ্যা যাচাই করে নেন গেহলট। তারপরই রাজ্যে দল অটুট রাখতে শচীন কাঁটা সরিয়ে দেওয়া হল।