রাজ্য

গরু পাচার মামলায় প্রশ্নের মুখে বিএসএফ কর্তাদের ভূমিকা, উল্লেখ ED-র চার্জশিটে

গরু পাচার মামলায় বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে আদালতে ২০৪ পাতার যে চার্জশিট জমা দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, তাতে কার্যত অভিযোগ করা হয়েছে বিএসএফের বিরুদ্ধেই। আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পেশ করা দাবিতে বিপাকে কেন্দ্রেরই বাহিনী। বলা হয়েছে, যে চক্রের মাধ্যমে বাংলাদেশে গরু পাচার হত, তাতে বড় ভূমিকা ছিল বিএসএফ কর্তাদের। এই প্রসঙ্গ সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ইডি’র চার্জশিটে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে ‘বিএসএফ আধিকারিকদের যোগসাজশে ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত মারফত গরু পাচার করা হত। রাত ১১টা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত সীমান্তের নির্দিষ্ট জায়গা হাট করে খুলে দিত বিএসএফ। তারপর পাচার চলত।’ ৪ মে বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মন্ডল ও কন্যা সুকন্যা মন্ডলের নামে রাউস এভিনিউ কোর্টে ২০৪ পাতার চার্জশিট পেশ করে ইডি। সূত্রের খবর, ইডির পেশ করা ওই চার্জশিটে নাম ছিল অনুব্রতর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিরও। বৃহস্পতিবার ইডির চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে যে, গরু পাচারের মাধ্যমে কমপক্ষে ৪৮ কোটি টাকা পেয়েছেন অনুব্রত মন্ডল। এখনও পর্যন্ত মোট ৩২ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি।

এদিকে,গত রবিবারই দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত অনুব্রত কন্যাকে ১২ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। তারপরেই প্রশ্ন ওঠে, এবার কি বাবার মতো মেয়েরও ঠাঁই তিহারেই? শেষ পর্যন্ত তিহারেই যেতে হয় সুকন্যাকে। নির্দেশনামা সামনে আসতেই বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যায়। উল্লেখ্য, আগে থেকেই এই জেলে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বুধবার বিকেলে পর গরু পাচার মামলায় সুকন্যাকে গ্রেফতার করে ইডি। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তিনদিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। রবিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে শুনানি ছিল অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যার। ভার্চুয়ালি শুনানি শেষে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। জানা গেছে, ইডি আর সুকন্যাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেনি। সূত্রের খবর, ইডি হেফাজতে থাকাকালীন ইডি অফিসারদের একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল সুকন্যাকে। তদন্তকারীদের প্রশ্নে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসারদের কাছে সুকন্যার আর্জি ছিল, বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হোক তাঁকে। শুধু তাই নয়, তিহাড়ে বাবার সঙ্গেও দেখা করতে চান সুকন্যা। এদিন আদালতের নির্দেশের পর সেই তিহাড়েই যাচ্ছেন সুকন্যা।

উল্লখ্যে,গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পরই অনুব্রতর সম্পত্তির খোঁজে তল্লাশি করতেই উঠে আসে তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নাম। তাঁর নামে একাধিক সম্পত্তি ও কোম্পানির হদিশ মেলে। এছাড়াও সামনে আসে বোলপুরে কোটি কোটি টাকার জমির পাশাপাশি তৃণমূল নেতার একাধিক রাইস মিলের একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। পেশায় একজন শিক্ষিকা হয়ে কি করে এত সম্পত্তির মালিক হলেন সুকন্যা, তা জানতেই অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর সুকন্যাকে দিল্লিতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। কিন্তু সেসময় তিনি জানিয়েছিলেন, এই সব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তাঁর বাবা ও হিসাবরক্ষকের কাছেই রয়েছে।