এবার দেশের মানুষকে বাঁচাতে কড়া পদক্ষেপ করল বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৮ সালে মায়ানমার সেনাদের নির্যাতনের মুখে পড়ে নাফ নদী পেরিয়ে প্রায় ২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। হৃদয়বান বাংলাদেশ তখন তাদের আশ্রয় দেওয়া হয় কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ি অঞ্চলে। ২০১৭ সালে এখানে যোগ দেয় আরও ৯ লাখ রোহিঙ্গা। তখন দুনিয়া জুড়ে শিরোনামে এসেছিল মায়ানমার সেনার বর্বরতার কাহিনী। কক্সবাজারের কুতুপালং এলাকায় বসতি গড়ে তোলে রোহিঙ্গারা।
জানা গিয়েছে, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দানের দৌলতে কর্মহীন রোহিঙ্গাদের দিন কাটে। ইদানিং এই রোহিঙ্গাদের অনেকের বিরুদ্ধেই নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে মামলাও দায়ের হয়েছে। মানবপাচার, ডাকাতি এবং মাদকপাচার–সহ নানা অপরাধে জড়িত অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। আবার সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমাতে গিয়ে ডুবে মারাও গিয়েছেন। মায়ানমার থেকে বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের ভাষাণচরে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের কক্সবাজারের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। সেখানে কোনও সামাজিক দূরত্ব নেই।
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশ আর কোনও রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে বাধ্য নয়। তারা বাংলাদেশি নাগরিকও নয়। কোনও রোহিঙ্গা যদি মালয়েশিয়ার ভূখণ্ডে যায় এবং আটক হয় তাতে বাংলাদেশের কিছু করার নেই। রোহিঙ্গারা শতাব্দী ধরে মায়ানমারে বসবাস করছে। তাদের মায়ানমারে না পাঠিয়ে বাংলাদেশে পাঠাতে চান মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব। বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, পৃথিবীর অত্যাচারিত এবং অতি নিপীড়িত একটি জাতিসত্তার নাম রোহিঙ্গা। মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গা বিতাড়নের ইতিহাসটা নেহাত সংক্ষিপ্ত নয়। রোহিঙ্গাদের উপর সেনার আক্রমণের শুরুটা ১৯৬০–এর দশক থেকেই। সম্প্রতি কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে ভারত সরকারের দেওয়া সেলাইমেশিন, সোলার–সহ বিভিন্ন ত্রাণসমগ্রী বিতরণ করেন বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস।
