আন্তর্জাতিক চাপ উড়িয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে পাঠানোর কাজ দ্রুত গতিতে চালাচ্ছে বাংলাদশ সরকার। যে দ্বীপ মাত্র ২০ বছর আগে সমুদ্রে ভেসে উঠেছিল, সেখানেই ১৮০০ রোহিঙ্গাকে পাঠাল বাংলাদেশ। যা নিয়ে প্রবল হইচই শুরু হয়েছে।
নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজে করে রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দল ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেয়। নৌবাহিনীর জাহাজগুলি চট্টগ্রাম নৌকা ক্লাব থেকে যাত্রা করে। বাংলাদেশের সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। নৌসেনা পাঁচটি জাহাজের সাহায্যে মোট ১৮০৪ জন রোহিঙ্গাকে ওই দ্বীপে পৌঁছে দিয়েছে বলে খবর। মানবাধিকার কমিশন ওই ১৮০৪ জনের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবির থেকে চট্টগ্রাম রওনা হয় এই রোহিঙ্গারা। তাঁদের নিয়ে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৩৭টি বাস চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সরকারি সূত্রে খবর, ভাসানচরে প্রত্যেকটি পরিবার পৃথক বাড়ি পেয়েছে। ঘর পেয়ে রীতিমতো আনন্দ ও সন্তোষ প্রকাশ করেছে শরণার্থীরা। কারণ তাদের নতুন বাসস্থান ও সুযোগ–সুবিধা কক্সবাজার থেকে অনেক উন্নতমানের।
ভাসান চর নিচু। তাছাড়া প্রতি বছর নিয়ম করে ওই দ্বীপ ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যত্ কী হবে! রাষ্ট্রপুঞ্জ বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সরকারের অবিলম্বে যেন ওই রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে! চলতি মাসের শুরুতেই ওই দ্বীপে ১৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে রেখে এসেছিল বাংলাদেশের নৌসেনা। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ওই দ্বীপে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গার বসতির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা মায়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছিল। কক্সবাজারে অবস্থান করছিল। তারপর ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর নতুন সাত–আট লক্ষ অসহায় মানুষ স্রোতের মতো আসতে থাকায় তখনই তাদের বসবাস–সহ অন্যান্য ব্যবস্থা করার প্রয়োজন ছিল তাৎক্ষণিকভাবে সেভাবে করা সম্ভব হয়নি।
