স্যাটেলাইট বহনকারী পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম রকেট। এই রকেটের মডেল তৈরি করে বিশ্বের একাধিক দেশকে চমকে দিয়েছে বাংলার এক পড়ুয়া। রাশিয়া আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আসর থেকে দ্বিতীয় স্থান ছিনিয়ে নিয়েছে হুগলির তারকেশ্বরের শ্রমণপঞ্চশীল দত্ত। ২০২২ সালে সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশনের এই ছাত্রের তৈরি রকেটের মডেল পরিবেশবান্ধব এবং জ্বালানি সাশ্রয়কারী। আর তাই প্রতিযোগিতার আয়োজনকারী রুশ সংস্থা শ্রমণপঞ্চশীলকে ডিপ্লোমাধারীর শংসাপত্র দিয়েছে।
শ্রমণপঞ্চশীলের বাবা গত হয়েছেন বহু বছর। তার মা শ্রীমা দত্ত গৃহবধূ। সংগ্রামমুখর জীবনকে সহজেই আপন করে নিয়েছে মেধাবী পড়ুয়া। পড়াশোনার সঙ্গেই তার অখণ্ড আগ্রহ মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে। আর নিত্যসঙ্গী আবিষ্কারের অনন্ত খিদে। এই খিদের কারণেই সর্বভারতীয় একটি প্রতিযোগিতায় পাহাড় ও সমতলে সমানভাবে চলতে পারে এমন গাড়ির মডেল পাঠিয়েছিল সে। কিন্তু সেই প্রতিযোগিতায় তাকে খালি হাতে ফিরতে হয়। আর তাতেই জেদ চেপে বসেছিল শ্রমণপঞ্চশীলের মধ্যে। গত মে মাসে রাশিয়ার এডুকেশন অ্যাকাডেমি ও আরও কয়েকটি সংস্থা মিলে ‘হরাইজন ২১০০’ নামে ভবিষ্যত পৃথিবীর নিরিখে মডেল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
সেই প্রতিযোগিতারই একটি বিভাগের জন্য পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম রকেটের মডেল জমা দেয় শ্রমণপঞ্চশীল। আর তারপরেই আসে সুখবর।
বাংলা তথা তারকেশ্বরের দশম শ্রেণির পড়ুয়ার মডেল জিতে নিয়েছে দ্বিতীয় পুরস্কার। সারা পৃথিবীর আরও হাজার হাজার মডেলকে পিছনে ফেলে জয় এসেছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। সন্দেহ নেই, ভীষণ উত্তেজিত এই পড়ুয়া। সে বলে, ওই প্রতিযোগিতার আরেকটি অংশ আছে। সেখানে বিশেষজ্ঞদের মুখোমুখি বসে নিজের মডেলকে উৎকৃষ্ট প্রমাণ করতে হয়। সেটা হলে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম রকেটকে বাস্তবের মাটিতে নামানোর সুযোগও মিলে যেতে পারে। আমি বিশেষজ্ঞদের মুখোমুখি বসতে মুখিয়ে আছি।
পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম স্যাটেলাইটবাহী রকেট। এটাই একটি পৃথক বৈশিষ্ট্য। যে কারণে বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশের বিশেষজ্ঞদের নজর কেড়েছে ওই মডেল। তার সঙ্গে ওই মডেলে আছে আরও কিছু বিশেষত্ব। সেগুলিও শ্রমণপঞ্চশীলের মডেলকে পৃথক সরণির বাসিন্দা করেছে। সে জানিয়েছে, তার রকেটে জ্বালানির খরচ খুবই কম। কারণ এটি ইলেকট্রিক, সোলার পাওয়ার ও ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক প্রোপালসান সিস্টেমে চলে। এখানেই রকেট পরিচালনার খরচ অনেকটা কমে যায়।