আম্বানি, আদানিদের স্বার্থে কেন্দ্র নয়া কৃষি আইন এনেছে বলে সরব হয়েছেন কৃষকরা। তাঁদের সুরে সুর মিলিয়েছে বিরোধীরাও। তার জেরে পাঞ্জাব–হরিয়ানায় রিলায়েন্স জিও’র টাওয়ার ভাঙচুর করা হয়। সেই ‘দুষ্কৃতী তাণ্ডব’ রুখতে সরকারি হস্তক্ষেপ চেয়ে সোমবার দুই রাজ্যে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল রিলায়েন্স কর্তৃপক্ষ। আদালতে মুকেশ আম্বানির সংস্থা সাফ জানিয়েছে, রিলায়েন্স অধীনস্থ কোনও সংস্থা আজ পর্যন্ত চুক্তিচাষের ব্যবসা করেনি। ভবিষ্যতেও এই ব্যবসায় আসার পরিকল্পনা তাঁদের নেই।
একটি বিবৃতি দিয়ে রিলায়েন্সের পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে, অতীতে তারা কখনও চুক্তিচাষের ব্যবসায় ঢোকেনি, আগামী দিনেও ঢুকবে না। তারা কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি খাদ্যশস্য কেনে না এবং সরবরাহকারীরাও ন্যূনতম সহায়ক মূল্যেই কৃষকদের থেকে শস্য কেনেন। তাদের সরবরাহকারীরা এমএসপি বা সরকারি নির্ধারিত নিয়মেই কৃষিজাত দ্রব্য কিনুক, তার ওপরই জোর দেয় রিলায়েন্স।
পাঞ্জাব–হরিয়ানা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে রিলায়েন্স জিও জানিয়েছে, পাঞ্জাবে তাঁদের মোট ৯ হাজার টাওয়ার আছে। তার মধ্যে ডিসেম্বর মাসে দেড় হাজার টাওয়ারে ভাঙচুর করা হয়। এই হামলার ফলে সংস্থার কর্মীদের জীবন, পরিষেবা, কমিউনিকেশন পরিকাঠামোর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছে এই সংস্থা। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরণের হামলা না হয়, তার জন্য দুই রাজ্যের সরকারের হস্তক্ষেপও দাবি করেছে তাঁরা।
রিলায়েন্স কর্তৃপক্ষের আরও অভিযোগ, কৃষক আন্দোলনের আড়ালে রিলায়েন্সের ব্যবসায়িক শত্রুরা কলকাঠি নাড়ছে। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে রিলায়েন্সকে নিশানা করা হচ্ছে। কৃষকদের আশ্বস্ত করার পাশাপাশি তারা এও জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরোধিতা করতে গিয়ে কৃষকেরা রিলায়েন্সের নামে যে অপবাদ রটিয়েছে, যে বিষোদ্গার করেছে, কোথাও কোথাও কোম্পানির অফিসে যে ভাঙচুর করেছে, তার বিরুদ্ধে তারা পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করবে। তবে রিলায়েন্সের এই বিবৃতি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কারণ, কিছুমাস আগে অনলাইন সুপার মার্কেট ‘জিওমার্ট’ চালু করেছে। সেখানে চাল, মশলা, তেল সবই পাওয়া যায়। ফলে অদূর ভবিষ্যতে তাঁরা যে চুক্তিচাষে নামবে না, তা কি হলফ করে বলা যায়? উঠছে প্রশ্ন।