বুধবার নবান্নে মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক শেষে লকডাউন নিয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, পরিস্থিতি বিবেচনা করে আগামী মে মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত লকডাউন থাকা দরকার। লকডাউনে সোমবার থেকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড়ের কথা নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। মূলত গ্রিন এবং অরেঞ্জ জোনের ক্ষেত্রে বলবৎ হবে এই ছাড়গুলি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দোকান খোলার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে এখনও কোনও নির্দেশিকা আমরা পাইনি। তাই আমাদের কিছু অসুবিধা হচ্ছে। তবে আমরা নিজেরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন ঘোষণা করে দেন, রাজ্যের গ্রিন জোনে ট্যাক্সি চালু হবে সোমবার থেকে। কলকাতায় অরেঞ্জ জোনেও হলুদ ট্যাক্সিকে ছাড় দেওয়া হবে। বিষয়টি পুলিশকে দেখে নেওয়ার কথা বলেন তিনি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, রাজ্যের গ্রিন জোনগুলিতে সোমবার থেকে চলবে বেসরকারি বাস। তাঁর কথায়, এটা অভূতপূর্ব এক সংকট। এটার থেকে মুক্তি পেতে হবে। ঘর থেকে বাইরে বেরোবেন না। প্রত্যেকে মাস্ক ব্যবহার করুন। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত লকডাউন মানতে হবে। বিশ্বের অনেক দেশ মে মাসের শেষ পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, গ্রিন ও অরেঞ্জ জোনে পাড়ায় যেখানে একটাই দোকান আছে, সোমবার থেকে সেইসব ছোট একটা দোকান খুলবে। ছোট ইলেকট্রলিক্স দোকান, স্টেশনারি দোকান, বইয়ের দোকান, রঙের দোকান, মোবাইল শপ, ব্যাটারি চার্জিংয়ের দোকান, চা–পানের দোকান, লন্ড্রি খুলবে। কিন্তু কোথাও ভিড় করা যাবে না। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে দোকান থেকে জিনিস নিয়ে বাড়ি চলে যেতে হবে। যেখানে হোম ডেলিভারি সম্ভব, সেখানে হোম ডেলিভারি করা হবে। তবে গ্রিন বা অরেঞ্জ জোনেও নাপিত, সেলুন বা পার্লার এখন খুলবে না। হকার্স কর্নার, ফুটপাথের দোকান খুলবে না বলে স্পষ্ট নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে আমাদেরও মে মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত লকডাউন মানতে হবে। কারণ এখনও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বিশেষজ্ঞ কমিটিও মে মাসের শেষ পর্যন্ত লকডাউন বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে। লকডাউনের নিয়ম মেনে ডাক্তাররা চেম্বার খুলতে পারেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বাসে ২০ জনের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না। প্রত্যেকদিন বাস স্যানিটাইজ করতে হবে। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে চলতে হবে। মাস্ক বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার করতে হবে। নিয়ম লঙ্ঘন করলে অনুমতি তুলে নেওয়া হবে।
৪ মে থেকে রাজ্যের গ্রিন ও অরেঞ্জ জোনে বেশ কিছু ছাড় ঘোষণা করেন তিনি। যেমন, খোলা থাকবে চা ও পানের দোকানও। তবে দোকানে কোনও আড্ডা মারা যাবে না। চা বা পান–বিড়ির দোকান থেকে প্রয়োজনের জিনিসটুকু নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। তা না হলে বন্ধ করে দেওয়া হবে দোকান। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, কনটেইনমেন্ট এরিয়ায় সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে। সেখানে এখনই কিছু করার নেই। রেশন, ব্যাঙ্ক, ধান দিন চেক নিন’ চালু থাকছে। টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দেওয়া হবে। কোনও সরকারি প্রকল্প বন্ধ হচ্ছে না।