করোনাভাইরাসকে পাশবালিশ করে নিতে গিয়ে এখন মাথা থেকে বালিশ সরে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে। কারণ আনলক করে দেওয়ার পর থেকেই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। শুক্রবার মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়ে গেল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজের খোঁজে যাওয়া এই রাজ্যের বাসিন্দারা ঘরে ফেরায় আক্রান্তের সংখ্যার ঊর্ধ্বগতি বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে করোনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল রাজ্য সরকার। এখন থেকে করোনায় কারও মৃত্যু হলে পরিবারের লোক তাঁকে শেষ দেখা দেখতে পাবেন। অনেকেই বলছেন, একদিকে সব খুলে দেওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আবার মলম লাগাতে শেষ দেখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটা দ্বিচারিতা ছাড়া কিছু নয়। ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যু মিছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও ১১ জনের।
অন্যদিকে শুক্রবার নবান্ন থেকে প্রকাশিত স্বাস্থ্য দপ্তরের সর্বশেষ করোনা বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৪২৭ জন। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭,৭০৩। মোট মৃতের সংখ্য়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯৪। পাশাপাশি রাজ্য সরকার জানিয়েছে, দাহ করার আগে দূর থেকে পরিবারের লোকদের শেষ দেখা দেখতে দেওয়া হবে। সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
উল্লেখ্য, কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রত্যেকদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। একদিনে সেখানে ১০১ জনের শরীরে এই মারণ ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। ফলে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২,৫৮৯ জন। হাওড়া, হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ভীষণভাবে বাড়ছে। হাওড়ায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৬২ জন। হুগলিতে সংখ্যাটা ৪৪। উত্তর ২৪ পরগনায় আরও ৬৫ জন নয়া করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, দেহের উপরের অংশ মাথা থেকে বুক পর্যন্ত ট্রান্সপারেন্ট শিল্ড দিয়ে ঢাকা থাকবে। যাতে বাড়ির মানুষ ওই ব্যক্তিতে দেখতে পায়। এতদিন করোনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে বাড়ির লোকের দেখার অনুমতি ছিল না। নির্দিষ্ট বিধি মেনে প্রশাসনের পক্ষ থেকেই মৃতদেহের সৎকারের ব্যবস্থা করা হত। সরকারি হাসপাতালের তুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে করোনায় মৃত্যুর হার বেশি। রাজ্য সরকারের অডিট টিম তাই বেসরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামো পরিদর্শনে যাবে।
