বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে সামনে রেখে দাঁড়িয়ে আছে ঢাকার রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম। সদর ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেই বাঁদিকে দেখা যাবে একটা শ্বেতপাথরের ফলক, তাতে লেখা ৭১ সালের শহিদ ৬২ জনের নাম। ডান পাশে আছে পুকুর। মায়ের দিঘি বলা হয়।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ঠিক দক্ষিণে ২.২২ একর জমির ওপর মন্দির আছে। যেখানে ভক্তনিবাস ও অন্যান্য স্থাপনার নির্মাণকাজ চলছে। পরিকল্পনায় রয়েছে ১০০০ আসনের একটি অডিটোরিয়ামও।
রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ গণতদন্ত কমিশনের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী ৬২ জন শহিদের নাম পাওয়া গিয়েছে। মন্দিরের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁরা বলছেন, হানাদার পাকবাহিনী মন্দিরের পুরোহিত এবং এখানে বসবাসকারী প্রায় শতাধিক মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছই। তারপর মন্দিরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে।
এই মন্দিরের পাশেই তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭১ সালের ৭ মার্চ স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। সেই ময়দান আজ বিশ্ব হেরিটেজ। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর মিত্রবাহিনীর কাছে এখানেই পাকবাহিনী আত্মসর্মপণ করে।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ সফরে এসে এই স্থানটিতে বানানো মুজিব–ইন্দিরা মঞ্চে দাঁড়িয়ে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ভাষণ দিয়েছিলেন। পাশেই রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পূর্বে হাইকোর্ট, দক্ষিণে কার্জন হল, পশ্চিমে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং মন্দিরের ঠিক উলটো দিকে রয়েছে জ্ঞানমন্দির বাংলা একাডেমি। আর মধ্যমণি হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে রমনা কালীমন্দির।
মন্দির কমিটির সভাপতি উৎপল সরকার জানান, ভারত সরকারের ৭ কোটি টাকা অনুদানে জোরকদমে এগিয়ে চলছিল মন্দিরের নির্মাণের কাজ। আসন্ন দুর্গোৎসবেই পাঁচতলা ভক্তনিবাস এবং মন্দিরভবন নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব কিছু ওলট-পালট করে দেয় সর্বানাশা করোনা মহামারি। টানা ৪ মাস বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হয়েছে নির্মাণকাজ।