জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে তিনটি কৃষি বিল নিয়ে খেলা জমে গেল। কারণ সংসদ থেকে আট সাংসদকে সাসপেন্ড করে কেন্দ্রীয় সরকার ভেবেছিল বাজি মেরে দিলাম। কিন্তু সংসদের বাইরে বিরোধীদের সারারাত ধর্ণা চাপে ফেলে দিয়েছে সরকারকে। তাই এই চাপমুক্ত হওয়ার জন্য মঙ্গলবার ভোরে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান তাঁদের চা খাওয়ার প্রস্তাব দেন। যা সরাসরি ফিরিয়ে দেন বিক্ষোভরত সাংসদরা। তাঁরা এই চা–রাজনীতিকে কৃষক বিরোধী বলে কটাক্ষ করেন।
এই ধর্ণায় মূলত আটজন সাসপেন্ড হওয়া সাংসদরা ছিলেন। কিন্তু সকালে রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই চেপে ধরল বিরোধীরা। কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা গুলাম নবি আজাদ জানিয়ে দেন, বিরোধীরা এই সভার অধিবেশন বয়কট করছে। যতদিন না এই তিনটি বিল এবং সাংসদদের ওপর থেকে সাসপেনশন উঠছে। সমস্ত বিরোধীরা সভা বয়কট করে বাইরে চলে আসায় এই সভার কোনও মূল্য থাকে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
এই পরিস্থিতিতে ঘৃতাহুতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টুইট। মঙ্গলবার টুইটে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, দু’দিন আগেই যাঁরা তাঁদের উপর আক্রমণ করেছিলেন ও তাঁকে অপমান করেছিলেন, ধর্ণায় বসা সেই সাংদদের ব্যক্তিগতভাবে চা পরিবেশন করার অর্থ হল, শ্রী হরিবংশ দয়ালু ও বিরাট মনের মানুষ। এতে তাঁর মহত্ব প্রকাশ পায়। হরিবংশ জি–কে অভিনন্দন জানানোর জন্য সারা দেশের মানুষের সঙ্গে আমিও যোগ দিলাম।
বিরোধীদের বিরুদ্ধে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে নালিশ ঠুকে তাঁদের সাসপেন্ড করার পর চা–পানের আমন্ত্রণ জুতো মেরে গরু দানের সামিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে একদিনের অনশন করার কথা ঘোষণা করলেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ। বুধবার পর্যন্ত অনশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
এই কৌশলেরও পাল্টা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিরোধীরা। সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের কম দামে যাতে বেসরকারি কোনও সংস্থা খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে একটি বিল আনারও দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। আর এমএস স্বামীনাথন কমিটির রিপোর্টের প্রস্তাবকে ভিত্তি করে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণ করা হোক বলে দাবি করা হয়েছে। এই দাবি মানা না হলে বাদল অধিবেশন বয়কট করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিরোধীরা। এই দাবিতে এদিন সংসদের অধিবেশন ছেড়ে বেরিয়ে আসেন বিরোধীরা। ধর্না প্রত্যাহার করে নেন সাসপেন্ডেড সাংসদরা। তবে অধিবেশন বয়কট চলবে।
