বাংলাদেশের জলপথ একের পর এক উন্মুক্ত হচ্ছে। আর তা যোগ দিচ্ছে ভারতের জলপথের সঙ্গে। এবার এই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে বাংলাদেশের রাজশাহী থেকে পশ্চিমবঙ্গের ধুলিয়ান পর্যন্ত জলপথটি। যা এক ঐতিহাসিক সাক্ষ্য বহন করবে।
কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশের ব্যস্ততম এবং গুরুত্বপূর্ণ বন্দর চট্টগ্রাম পোর্ট ব্যবহারের অনুমতি পাওয়ার পাশাপাশি মোংলা পোর্টও ব্যবহার করবে ভারত। এই দু’টো পোর্ট থেকে রেল, সড়ক এবং জলপথেও পণ্য পরিবহণ হবে উত্তর–পূর্বের রাজ্যে। এবার পশ্চিমবঙ্গের ধুলিয়ানের মোয়া থেকে পদ্মার বুক চিরে পণ্য আসবে বাংলাদেশের রাজশাহীর সুলতানগঞ্জে।
আশ্চর্য লাগলেও এটাই বাস্তবায়িত হতে চলেছে। এভাবেই ঘটতে পারে তিস্তা জলবন্টন চুক্তি। তবে জানা গিয়েছে, সুলতানগঞ্জ–মোয়া জলপথটি খুবই সম্ভাবনাময়। আগেও এটি সচল ছিল। নাব্যতাজনিত সংকটের দরুন এই জলপথটির ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ্য, আগে ধুলিয়ানের ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে ভারতের রাজ্য ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে পাথর এসেছে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের জন্য।
ইতিমধ্যেই উত্তর–পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সোনামুড়ায় চলতি মাসের ৫ তারিখে জলপথে পরীক্ষামূলকভাবে পণ্যের সফল চালানের পর এবারে পশ্চিমের জলপথে হাত লাগাল বিআইডব্লিউটিএ। আগামী অক্টোবর মাসেই বাংলাদেশের রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ থেকে পদ্মার বুক চিরে পশ্চিমবঙ্গের ধুলিয়ানের মোয়া নৌবন্দর পর্যন্ত জলযান চলাচল শুরু করবে।
গত ২০ মে সুলতানগঞ্জ–মোয়া জলপথটিকে বাংলাদেশ–ভারত আন্তর্জাতিক নৌ–প্রোটোকলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই জলপথটি নতুন করে মানিকগঞ্জের আরিচা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে।
এই নৌরুটটিকে ঘিরে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে দারুণ উৎসাহ দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, এই জলপথটিকে পুনরায় চালু করতে তাঁরা অনুরোধ করেছেন। জলপথটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বিপাকে পড়েন উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা। দু’ দেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুলতানগঞ্জ–ধুলিয়ান জলপথ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। দু’দেশ থেকেই পণ্য পরিবহণ হবে।
এই জলপথে যে সব পণ্য পরিবাহিত হবে তার মধ্যে রয়েছে কয়লা, নুড়িপাথর, বোল্ডার পাথর, সিমেন্ট, ইট, ফ্লাইঅ্যাশ ইত্যাদি। বাংলাদেশের দিনাজপুরের কয়লা, কুষ্টিয়ার ইট, রাজশাহীর বালি ইত্যাদি ভারতে যাবে। ফ্লাইঅ্যাশ, বোল্ডার ও নুড়িপাথর ভারত থেকে আসবে।
