নিম্নচাপের দাপটে মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়ে চলেছে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশে। ভারী বৃষ্টি পেয়েছে কলকাতাও। গত ২৪ ঘণ্টায় শহরে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগস্ট মাসে এই প্রথম, শহরে বৃষ্টির পরিমাণ ৫০ মিলিমিটারের গণ্ডি পেরোলো। বৃহস্পতিবার রাতের পর শুক্রবারও সকাল থেকেই শুরু হয়েছে নাগাড়ে বৃষ্টি। রাস্তায় রাস্তায় জমেছে জল।
যে নিম্নচাপটির প্রভাবে গত তিনদিন এই বৃষ্টি হচ্ছে, সেটি এখন ঝাড়খণ্ড হয়ে মধ্য ভারতের দিকে চলে গিয়েছে। তবে তার রেশ দক্ষিণবঙ্গের ওপরে রয়ে গিয়েছে। এই নিম্নচাপের প্রভাবে সব থেকে বেশি লাভবান হয়েছে রাজ্যের দুই উপকূলবর্তী জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগণা আর পূর্ব মেদিনীপুর। শহরজুড়ে বৃষ্টিপাতের জেরে বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ অনেকটাই কম। বৃষ্টি থামার কোনও লক্ষণ নেই। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবারও গোটা দিন ধরে বৃষ্টি হয়েছে। সেটি মধ্য ভারতের দিকে সরে যাচ্ছে। তবে রবিবার নাগাদ বাংলা–ওড়িশা উপকূলে আরও একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। তার প্রভাবে আবার বৃষ্টি বাড়ার আশঙ্কা।
এই মরশুমে এখনও পর্যন্ত এই দুই জেলায় বৃষ্টিতে ব্যাপক ঘাটতি ছিল। সেই ঘাটতি এখন অনেকটাই মিটিয়ে নিয়েছে জেলাগুলি। গত তিন দিনে গড়ে ২২০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কলকাতায় গত তিন দিনে বৃষ্টি হয়েছে ১২০ মিলিমিটার। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। আলিপুরে বৃষ্টি হয়েছে ৩৪ মিলিমিটার। সারাদিন ধরে নাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় ঠাণ্ডা ভাব অনুভূত হচ্ছে। তবে সম্ভাব্য নিম্নচাপের প্রভাবে সোমবার ও মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টি হতে পারে কলকাতায়।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, শুক্রবার বিকেলের পর থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা করা যায়। তবে ২৪ ঘণ্টা পরেই ফের বৃষ্টির দাপট বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে চলেছে আরও একটি নিম্নচাপ। ওই নিম্নচাপের প্রভাব কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ বেশি থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত কলকাতা, দুই ২৪ পরগণা, দুই মেদিনীপুর আর পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে কয়েক দফায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। পরের বুধবার থেকে দাপট কমবে বৃষ্টির। জুলাই মাসে মৌসুমি অক্ষরেখা একটানা হিমালয়ের কোলে ছিল। ফলে উত্তরবঙ্গে টানা বৃষ্টি হয়েছে। আগস্ট মাসে অক্ষরেখা রয়েছে দক্ষিণে। পর পর নিম্নচাপ সৃষ্টির এটিও একটি কারণ।