ইতিমধ্যেই কৃষক আন্দোলন গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তার মধ্যে কোনও রফাসূত বেরিয়ে আসেনি। অথচ হরিয়ানার উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্যন্ত চৌটালার দাবি, আগামী ২৪–৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কৃষকদের সঙ্গে রফা করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারই মধ্যে নয়া তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকদের প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়ে ইস্তফা দিলেন পাঞ্জাবের ডিআইজি (কারা) লক্ষ্মিন্দর সিং জাখর। পাঞ্জাব সরকারের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে দাবি করেন জাখর।
সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, পাঞ্জাবের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান সচিবের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন জাখর। তিনি বলেন, ‘কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদকারী আমার কৃষকভাইদের সমর্থন জানাতেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ জননায়ক জনতা পার্টির নেতার চৌটালার নির্বাচনী কেন্দ্র কৃষিপ্রধান। ফলে তাঁর উপরে বাড়ছে চাপ। বিজেপি’র সঙ্গে জোট ছিন্ন করার দাবিও উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের সঙ্গে দেখা করেন চৌটালা। তারপর সংবাদসংস্থা এএনআই–কে তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী কৃষকদের সঙ্গে কেন্দ্রের আলোচনা ফলপ্রসূ হবে। আগামী ২৪–৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হয়ে যাবে চূড়ান্ত কথাবার্তা। কৃষকদের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁদের অধিকার রক্ষা আমার নৈতিক দায়িত্ব।’
নতুন কৃষি আইন বাতিল করার দাবিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে দিল্লির বিভিন্ন সীমায় হাজার হাজার কৃষক বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। দিল্লি সীমানা বরাবর হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং অন্যান্য এলাকায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কৃষকরা। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য এবং আনুষঙ্গিক কয়েকটি বিষয়ে আইন সংশোধন করতে কেন্দ্রের তরফে লিখিত নিশ্চয়তা দেওয়া হলেও কৃষকরা নিজেদের দাবিতে অনড়। আইন বাতিলের প্রশ্নে তাঁরা কেন্দ্রের কাছ থেকে শুধুমাত্র ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’ উত্তর চেয়েছেন। সংযুক্ত কিষান আন্দোলনের নেতা কমল প্রীত সিং পান্নু জানান, ১৪ ডিসেম্বর থেকে দিল্লির সিংঘু সীমান্তে একই মঞ্চে অনশনে বসবেন সব কৃষক নেতারা। আমরা চাই সরকার ৩ কৃষি আইন প্রত্যাহার করুক। কোনও সংশোধনীতে আমরা বিশ্বাস করি না। কেন্দ্র আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করলেও শান্তিপূর্ণ উপায়ে আমাদের আন্দোলন চলবে।
উল্লেখ্য, অকালি দলের প্রবীণ নেতা ও পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদল বলেছিলেন, তিনি কেন্দ্রের কৃষি আইনের প্রতিবাদে তাঁর ‘পদ্মবিভূষণ’ পুরষ্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন। দিল্লি থেকে ১২০ কিমি দূরে রাজস্থানের শাহজাহানপুর জেলায় রবিবার জমায়েত হন কৃষকরা। কৃষকদের লম্বা মিছিল ক্রমশ এগিয়ে চলে দিল্লির দিকে। রিওয়ারি সীমানায় দিল্লি–জয়পুর হাইওয়ে আংশিকভাবে বন্ধ করে দেয় পুলিশ। দিল্লি যন্তরমন্তরে দলের সাংসদদের সঙ্গে ধর্ণায় বসেছেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। তিনি বলেন, ‘আমার সহযোগীরা কৃষকদের এই সমস্যা সমাধানের আবেদন জানিয়েছিল কেন্দ্রকে। নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে শীতকালীন অধিবেশনের দাবিও জানানো হয়েছিল।’
