রেল মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামীদিনে মোট ১০৯টি রুটে বেসরকারি ট্রেন চালানোর জন্য কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালনার দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। বেসরকারিকরণের দিকে আরও একধাপ অগ্রসর হল দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান। ফলে করোনা আবহে বেসরকারি সংস্থার হাতে ট্রেন তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর।
ইতিমধ্যেই বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছে প্রস্তাব চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বস্তুত জল্পনা দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল, কিন্তু লকডাউনের পর পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, এরই মধ্যে এই বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কেন্দ্র। রেল মন্ত্রকের তরফে এক বেসরকারি সংস্থার পক্ষে জারি করা হয়েছে রিকুয়েস্ট ফর কোয়ালিফিকেশন। ১০৯টি রুটে মোট ১৫১টি ট্রেন চালানোর অনুমতি পাবে এই সংস্থা। তবে তার জন্যে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে সংস্থাটিকে। ট্রেন পরিষেবা বিশ্বমানের করে তোলা এবং আধুনিক প্রযুক্তির সূচনায় এই পদক্ষেপ করেছে রেল মন্ত্রক।
পরিসংখ্যান বলছে, ভারতীয় রেলে সবথেকে বেশি কর্মসংস্থান হয়। রেলে সুবিধা গ্রহণ করে দেশের কোটি কোটি মানুষ। কিন্তু ভারতীয় রেলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ রয়েছে। পরিকাঠামোগত অনুন্নয়নের অভাব রয়েছে এখানে, নেই বিনিয়োগ। এমনকী নীতিগত সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে রেল। রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর, ভারতীয় রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যে সব যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে, সেখানে বেসরকারিকরণ এটাই হবে প্রথম পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের প্রধান কারণ ট্রেন পরিষেবায় আরও উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে আসা যাতে রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে খরচ কমে, যাতায়াতের সময় বাঁচে, নতুন কর্মসংস্থান হয়, বাড়তি সুরক্ষা এবং বিশ্বমানের যাত্রার অভিজ্ঞতা সুনিশ্চিত করা।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, রেল বেসরকারিকরণ হলে অনেক বেশি ঝাঁ চকচকে উন্নতমানের হবে। ঠিক যেমনটা রয়েছে বিমানবন্দরগুলি। অত্যাধুনিক সুবিধা যেমন বাড়বে, তেমনটা বাড়তে পারে কর্মসংস্থানও। সব থেকে বড় কথা, যাত্রী নিরাপত্তা আরও বেশি আঁটোসাঁটো হবে। রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, এই উদ্যোগে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে। রেলের রেকগুলিকে ভারতেই তৈরি করতে হবে এবং বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব নিতে হবে মূলধন জোগান দেওয়ার, ট্রেন সংগ্রহ, পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের। ট্রেনগুলির সর্বোচ্চ দ্রুততা হবে ১৬০ কিমি প্রতি ঘন্টা। এতে যাত্রার সময় অনেকটাই কমবে। নির্দিষ্ট রুটে ভারতীয় রেলের দ্রুততম ট্রেনের সঙ্গে তুলনা করা যাবে এই নতুন ট্রেনের স্পিড।