শুক্রবার কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। আর সেই পুজোর আয়োজন করতে গিয়ে কার্যত নাভিশ্বাস অবস্থা মধ্যবিত্ত বাঙালির। কারণ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। পেশায় গৃহশিক্ষক তাপস রায় বুধবার বিকেলে হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন লক্ষ্মীপুজোর বাজার করতে। বাজার করে তাঁর প্রতিক্রিয়া, কখন যে হাজার টাকা শেষ হয়ে গেল, টেরও পেলাম না! খুচরো পয়সাটুকুও নেই।
উত্তর কলকাতার মানিকতলার বাসিন্দা কিংশুক প্রামাণিকেরও একই দাবি। তাঁর কথায়, ফল, সবজি, প্রতিমা সব কিছুর দাম গত বছরের তুলনায় আড়াই গুণ বেড়ে গিয়েছে। পুজো করা কার্যত মাথায় উঠেছে। সবকিছু যেন লাগামছাড়া। কলকাতার বিভিন্ন বাজারে লক্ষ্মীপ্রতিমা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। লক্ষ্মীর বড় সরার দাম ছিল ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। কাকুতি–মিনতি করেও দাম কমানো যাচ্ছে না। কেউ দাম কমাতে প্রস্তুতও নন।
ফলের দামও আকাশ ছোঁয়া। যাদবপুর, গড়িয়া, মানিকতলা, শোভাবাজারে আপেলের কেজি ছিল ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে। শসা ৭০ টাকা কেজি। নাশপাতির কেজি ১৫০ টাকা। মুসাম্বি লেবুর জোড়া ৩০ টাকা। মাঝারি মাপের কাঁঠালি কলা ৬০ টাকা ডজন। নারকেলের দাম উঠেছে ৫০ টাকায়। সবজির বাজার–দর দুর্গাপুজোর আগে থেকেই আগুন। একেবারে ছোট মাপের ফুলকপি ৪০ টাকা পিস। পটল, বেগুনের কেজি প্রতি দাম ৭০–৮০ টাকা। বরবটির কেজি ৬০ টাকা।
শিয়ালদহে লক্ষ্মীপুজোর বাজার করছিলেন ব্যারাকপুরের মৈনাক দাস। তিনি বলছিলেন, রেডিমেড নাড়ু, মোয়াই এবার মধ্যবিত্তের সহায়। গুড়, নারকেল কিনে বাড়িতে বানাতে গেলে খরচ অনেক বেশি। নম নম করে পুজোটা সারতে পারলেই হল। করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক টানাটানি চলছে বহু পরিবারে। তার উপর মাসের একেবারে শেষে পুজো। ধন–সম্পদের দেবীর পুজোয় অর্থ সংকটই বড় সমস্যা।