নিষ্ঠুর–নৃশংস–নির্মম। একটু খাবারের আশায় গ্রামে পাড়ি দিয়েছিল সে। কিন্তু শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের বিকৃত চাহিদায় বলি হল সে। প্রাণটাও কেড়ে নিতে হাত কাঁপল না। তখন সে সন্তানসম্ভবা। মানুষ যে এত নির্মম, নিষ্ঠুর সেটা ওই হাতি বুঝতে পারেনি। আনারসের মধ্যে বিস্ফোরক ভরে খাইয়ে দেওয়া হয়েছিল হাতিটিকে। কেরলের মালাপ্পুরমে বাজিভরা আনারস খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে এক মা হাতি ও তাঁর গর্ভে থাকা সন্তানকে। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দায় গর্জে উঠেছে গোটা দেশ। বিজেপি সাংসদ মানেকা গান্ধী থেকে শুরু করে বলিউড–টলিউড তারকারা সরব হয়েছেন। ধিক্কার দিচ্ছেন সাধারণ মানুষও। তৈরি হয়েছে পোস্টার, সোশ্যাল মিডিয়ায় কমেন্ট বক্স উপচে পড়ছে লেখায়।
ঠিক কী হয়েছিল? বিস্ফোরক ভরা আনারস মুখে পোরার পরই তীব্র বিস্ফোরণ হয়। আর তাতেই হাতিটির জিভ ও মুখের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। প্রবল জ্বালা যন্ত্রণায় লোকালয়ের আশপাশে কয়েকদিন ধরে ঘুরে বেরিয়েছিল হাতিটি। তখনও কোনও মানুষ হাতিটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। গর্ভবতী হাতিটি এরপর নদীর জলে নেমে যায়। মুখ ডুবিয়ে রাখে জলে। একটু জ্বালা কমে! কিন্তু নদীতে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই হাতিটি মারা যায়।
প্রশ্ন উঠছে, মানুষ এমনও পারে? যদিও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অবস্থা বুঝে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। বন বিভাগের অফিসার মোহন কৃষ্ণন গোটা ঘটনার বিবরণ দিয়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তারপর থেকেই দেশ উত্তাল। ইতিমধ্যে এটপসি রিপোর্ট এসেছে বন দপ্তরের কর্তাদের হাতে। সেখানে লেখা আছে, হাতিটির মৃত্যু হয়েছিল ফুসফুসে জল ঢুকে, শ্বাসরোধ হয়ে। পোড়ার জ্বালা থেকে বাঁচতে জলের নিচে দীর্ঘ সময় মুখ ডুবিয়ে রেখেছিল হাতিটি। ওই অবস্থাতেই দম আটকে মারা যায় হাতিটি। বিজেপি সাংসদ তথা পশুপ্রেমী বলে গোটা দেশে পরিচিত মুখ মানেকা গান্ধীর কথায়, এটা নৃশংস হত্যা।