ব্রেকিং নিউজ রাজ্য

নয়া বিতর্কে বাতিল সোমেনের স্মরণসভা

শেষ হয়েও হল না শেষ। এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। কারণ প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের স্মরণসভা হওয়ার কথা ছিল আগামী ২৬ আগস্ট। স্থান ঠিক হয়েছিল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। কিন্তু তাঁর স্ত্রীর ‘আপত্তিজনক’ চিঠি পাওয়ার পর সেই সভা বাতিল করা হয়। আর তাতেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। অনুষ্ঠানটি দলীয় কর্মসূচি হিসেবেই আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ব্যক্তিগত আপত্তিতে তা বাতিল হয়ে যাওয়ায় অবাক সকলেই।
সূত্রের খবর, এই স্মরণসভার জন্য ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র চেয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেস। কিন্তু সেখানে প্রচুর জিনিসপত্র পড়ে থাকায় রাজ্য সরকার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রের পরিবর্তে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর তা নিয়েই নাকি আপত্তি। কংগ্রেসের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্মরণসভার জন্য বিনা ভাড়ায় নেতাজি ইন্ডোর কংগ্রেসকে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
তারপরই সমস্ত কাজই প্রায় সেরে ফেলেছিল কংগ্রেস নেতৃত্ব। আমন্ত্রণপত্র ছাপা থেকে স্টেডিয়ামে মঞ্চ তৈরির জন্য ডেকরেটর্সকে দায়িত্ব দেওয়া—সবই চূড়ান্ত। আচমকা সেই স্মরণসভা বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। প্রয়াত সোমেন মিত্রের স্ত্রী ও প্রাক্তন বিধায়ক শিখা মিত্র প্রদেশ কংগ্রেসকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, বর্তমানের করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে এমন অনুষ্ঠান করা উচিত নয়। এই চিঠি পাওয়ার পরই পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
ঠিক কী লেখা হয়েছে চিঠিতে?‌ দলীয় সূত্রে খবর, তিনি চিঠিতে লিখেছেন, সোমেনবাবুর প্রতি তাঁর সহকর্মী, সহযোগী এবং দলীয় কর্মীদের আবেগ তিনি অনুভব করেন। কিন্তু বর্তমানে যে বিশেষ সামাজিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে, তাতে এই স্মরণসভার আয়োজনে তাঁর তীব্র আপত্তি রয়েছে। প্রাসঙ্গিক যুক্তি থাকলেও প্রশ্ন উঠছে, অনুষ্ঠানটি ছিল একটি দলীয় কর্মসূচি। সেক্ষেত্রে কেন ব্যক্তিগত আপত্তিতে তা বাতিল করা হল?‌
এমনকী এই অনুষ্ঠান বাতিলের ব্যাপারে কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করার দাবি তোলা হয়েছে। অনুষ্ঠানটির যাবতীয় চিঠিপত্র করা হয়েছিল রাজ্যসভার সাংসদ এবং দলের প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি (সোমেন মিত্রের মৃত্যুর পর সাময়িক দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রদীপ ভট্টাচার্যের নামে। তিনি জানান, পরিবারের আপত্তি থাকায়, তাঁরা এখন অনুষ্ঠান করছেন না।
কিন্তু স্মরণসভা বাতিলের সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারছে না প্রদেশ কংগ্রেস বড় অংশ। দলের সাংসদ এবং লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী জানান, এটা তো পরিবারের অনুষ্ঠান নয়। পুরোপুরি দলের ব্যাপার। কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না হয়ে সোমেনদা’র স্মরণসভা এভাবে বাতিল হয়ে গেল, এটা শুনে অদ্ভুত লাগছে।