সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও জাতিগত জনগণনার জন্য মোদী সরকারের উপর সরকারি স্তরে চাপ তৈরি করুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়ে তাঁর উপরই ভরসা রাখতে চাইছে এরাজ্যে পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করা একাধিক সংগঠন। মূলত বামপন্থী মানুষের সমন্বয়ে তৈরি এই সংগঠনগুলি।
তবে অবামপন্থী কিছু বিশিষ্টজনও এই ছাতার তলায় এসেছেন দাবির সমর্থনে। একই সঙ্গে সব ধর্মের সমস্ত পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নের পরিকল্পনা করতে একটি বহুজন কমিশন গঠনেরও দাবি জানিয়েছে তারা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। এই ব্যাপারে সংগঠনগুলির তরফে মমতাকে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে একটি কনভেনশনের পর সাংবাদিক বৈঠকে তাদের অভিমতের কথা জানানো হয়। প্রসেনজিৎ বসু, অভীক সাহা, শরদিন্দু উদ্দীপন, কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর, সুখবিলাস বর্মার মতো রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক বিশিষ্ট ব্যক্তিরা হাজির ছিলেন সেই সাংবাদিক বৈঠকে। তাঁরা জানান, কেন্দ্রের মোদি সরকার কিছুতেই পিছিয়ে পড়া মানুষের অধিকার পাইয়ে দিতে চায় না।
তারা জাতিগত জনগণনার পথে হাঁটবে না বলে জানিয়েছে। সব ধর্মের মানুষ মিলিয়ে বাংলায় বিভিন্ন ধরনের পিছিয়ে পড়া মানুষের সংখ্যা ৯০ শতাংশের বেশি। উচ্চ জাতের মানুষ সেই তুলনায় খুবই কম। সারা দেশের ছবিটাও প্রায় এক। কিন্তু বিজেপি এসব সত্ত্বেও পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার স্বার্থে জাতিগত জনগণনা করাতে চাইছে না। উচ্চবর্ণের সংখ্যালঘু কিছু মানুষ ক্ষমতার শীর্ষে বসে আছেন বলেই তারা সংখ্যাগুরু জনতাকে প্রকৃত অধিকার দিতে চান না।
জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবিতে সরব এই নেতারা বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে এব্যাপারে তাঁর ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু সকলে চাইলে তিনিও আপত্তি করবেন না—এমন ধরনের অস্পষ্ট অবস্থান যথেষ্ট নয় এব্যাপারে। তিনি যখন কেন্দ্রের বিভিন্ন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন তখন এবিষয়েও স্পষ্ট এবং দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করে এই দাবির সপক্ষে কেন্দ্রকে চিঠি দিন। একই সঙ্গে এরাজ্যে একটি বহুজন কমিশন গঠন করে পিছিয়ে পড়া তামাম মানুষের উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদি রূপরেখা তৈরির কথা ঘোষণা করুন।