কাশীপুর, যাদবপুর, নিউ মার্কেটের পর এবার ফুলবাগান, বেনিয়াপুকুর, বউবাজার বেহালা— কলকাতা শহরে ‘অক্ষত’ এটিএম থেকে টাকা লুটের তালিকা ক্রমশ লম্বা হচ্ছে। ১২ মে থেকে ২২ মে, গত ১০ দিনে কলকাতা শহরের অন্তত ১০টি এটিএম থেকে ২ কোটি টাকা কার্যত ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। মূলত আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের এটিএমই যার শিকার। কেন আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের এটিএমকেই টার্গেট করেছে দুষ্কৃতী দলটি? লালবাজার সূত্রে খবর, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কটির পুরনো মডেলের এটিএম বেছে নেওয়ার অন্যতম কারণ হল, এর সুরক্ষার ফাঁকফোঁকর তাদের নখদর্পণে।
প্রাথমিক তদন্তে গোয়েন্দারা মনে করছেন, একটিই গ্যাং কলকাতাজুড়ে এই কাজ করে বেড়াচ্ছে। ভিনরাজ্যের ওই দল কলকাতা শহরে মাসখানেক ধরে ঘাঁটি গেড়ে এটিএম ফাঁকা করে দিচ্ছে। পুরো ক্ষতিটাই ব্যাঙ্কের। কারণ, এই গ্যাং কোনও গ্রাহকের এটিএম কার্ড ক্লোন করে কিংবা অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতিয়ে জালিয়াতি করছে না। ব্যাঙ্ক যে টাকা এটিএমে ভরছে সেই অর্থই লুট করছে হ্যাকাররা।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, হরিয়ানার ফরিদাবাদে এই একই কায়দায় এটিএম থেকে টাকা খোয়া গিয়েছে। ফরিদাবাদ পুলিস দু’–একজনকে গ্রেপ্তার করলেও, কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। লালবাজারের সন্দেহ, সেই পলাতকরাই কলকাতায় বসে এই কারবার চালাচ্ছে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘কিছু টেকনিক্যাল এভিডেন্স আমরা পেয়েছি। তার ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।’ দ্রুত এই অপরাধের কিনারা হবে।
অতীতে কলকাতা শহরে একাধিক কায়দায় এটিএম লুট ও জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। অতীতে রোমানিয়ান গ্যাং এটিএমে স্কিমার মেশিন লাগিয়ে ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের টাকা লুট করেছে। তেমনই হরিয়ানার মেওয়াট গ্যাং গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম কেটে লাখ লাখ টাকা লুট করেছে। কিন্তু এবারের কায়দা একেবারে অভিনব। লুট করলেও এটিএম ‘অক্ষত’ রাখাই তাদের হাতযশ।
