এ কোন সকাল! অবাক হওয়ার মতোই ঘটনা ঘটেছে জেলায়। লকডাউনের ভোরে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল এক পুলিশ অফিসারের। দক্ষিণ ২৪ পরগণার বেহালার বাসিন্দা ওই অফিসারের পোস্টিং ছিল শিলিগুড়িতে। এদিন তাঁর পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে আরও দু’জনের। রাজ্য পুলিশের সিও দেবশ্রী চ্যাটার্জী, তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তাপস বর্মন এবং গাড়ির চালক মনোজ সাহার মৃত্যু হয়েছে। সকালে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পিছনে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ধাক্কা মারে অফিসারের স্করপিও গাড়ি। চালক সম্ভবত ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। আহত তিনজনকেই দাদপুর থানার পুলিশ চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান হুগলির এস পি তথাগত বসু। হুগলি ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে তিনজনের মৃতদেহ আপাতত রাখা হয়েছে।
দেবশ্রী চ্যাটার্জী বাড়ি কলকাতার বেহালার পর্ণশ্রীতে। তিনি রাজ্য পুলিশের ১২ ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডিং অফিসার ছিলেন। শিলিগুড়ির ডাবগ্রামে ছিল তাঁর পোষ্টিং। ওই গাড়িতেই থাকা বাকি দু’জনের মধ্যে একজন হলেন দেবশ্রীর দেহরক্ষী ও একজন গাড়ির চালক। তাঁদের দু’জনের এখনও পরিচয় জানা যায়নি। সিটি কলেজ থেকে ভূগোল নিয়ে পাস করার পর ১৯৮৮ সালে ফোর্স জয়েন করেছিলেন দেবশ্রী চ্যাটার্জী। দু’বছর ছিলেন পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে। এরপর লালবাজার ওমেন গ্রিভান্স সেলে ছিলেন সাব ইন্সপেক্টর পদে। ২০১০ সালে নর্থ পোর্ট থানার ওসি পদে দায়িত্বগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন প্রথম মহিলা ওসি।
দাদপুর থানার হোদলা ব্রিজের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বালির লরির পেছনে সজোরে ধাক্কা মারে গাড়িটি। নর্থ পোর্ট থানার ওসি হিসাবে যোগ দেওয়ার আগে ডিটেক্টিভ ডিপার্টমেন্টের ইমমরাল ট্রাফিকিং উইংয়ের ইনচার্জ ছিলেন। তার আগে ইকবালপুর থানার এসআই ছিলেন দেবশ্রী চ্যাটার্জী। পার্কস্ট্রিট ও হেয়ার স্ট্রিট থানাতেও দায়িত্ব সামলেছেন। সাইবার ক্রাইম সেল-এও ছিলেন। ২০১২ সালে কলকাতা পুলিশের সিকিউরিটি কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টে ট্রান্সফার হয় তাঁর। দেবশ্রী চ্যাটার্জীর ১৮ বছরের ছেলে রয়েছে।
উল্লেখ্য, কলকাতা পুলিশের প্রথম মহিলা ওসি ছিলেন দেবশ্রী চ্যাটার্জী। ২০১০ সালে উত্তর বন্দর থানায় ওসি হন তিনি। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর অফিসারদের কলকাতা থেকে জেলায় ডেপুটেশনে পাঠানো হয়েছিল, তিনি ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।