করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই শেষ। করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ কেড়ে নিল কবি শঙ্খ ঘোষকে। বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। গায়ে জ্বর থাকায় করোনা পরীক্ষা করিয়ে ছিলেন তিনি। গত বুধবার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শরীরে বেশ দুর্বল ছিল। নানারকম উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও বাড়িতেই আইসোলেশনে ছিলেন। ২০২০ সালে অনেক প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিকে হারিয়েছিল বাংলা। ২০২১ সাল কেড়ে নিল বাংলার আরও একটি ব্যক্তিত্ব, কবি শঙ্খ ঘোষকে।
গত ১৪ এপ্রিল বিকেলে রিপোর্ট এলে জানা যায়, তিনি সংক্রমিত হয়েছেন। এমনিতেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন কবি, যা শারীরিক ভাবে দুর্বল করে দিয়েছিল তাঁকে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে এই বছর জানুয়ারি মাসে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয় তাঁকে। মঙ্গলবার রাতে আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। বুধবার সকালে তাঁকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন কবি। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ভেন্টিলেটর খুলে নেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাংলা সাহিত্য মহল। তাঁর মৃত্যু বাংলা সাহিত্যে যে শূন্যতা তৈরি করল এক কথায় তা অপূরণীয়। শঙ্খ ঘোষের মতো মহাপ্রাণের প্রয়াণ বাঙালিকে বারবার মনে করাবে–সব মরণ নয় সমান। সত্তরের ঝোড়ো দিন থেকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, কখনও কোনও শাসকই তাঁর স্বরকে কিনতে পারেনি। তাঁর কলম ছিল চির জাগরুক। মণীন্দ্রকুমার ঘোষ ও অমলা ঘোষের সন্তান শঙ্খ ঘোষের জন্ম ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। প্রাথমিক লেখাপড়া পাবনায় ১৯৫১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজে বাংলায় স্নাতক হন। স্নাতোকত্তর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। চার দশক সাফল্যের সঙ্গে শিক্ষকতা করেছেন তিনি। ১৯৭৭ সালে বাবরের প্রার্থনা কাব্যগ্রন্থটির জন্য সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান তিনি। রক্তকল্যাণ নাটকটি অনুবাদ করে সাহিত্য অ্যাকাডিমি পান ১৯৯৯ সালে। ২০১১ সালে শঙ্খ ঘোষ পদ্মভূষণে সম্মানিত করে কেন্দ্রীয় সরকার।
