শুরুতে ব্লান্ডারটা তিনিই করেছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় সর্বদলীয় বৈঠকে বেশ জোরের সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘কেউ ভারতের এলাকায় ঢোকেনি, ভারতের কোনও চৌকি দখলও করেনি।’ এই কথা বলার পর থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, তাহলে কেন ভারতীয় জওয়ানদের প্রাণ দিতে হল? তবে এবার ব্যাখ্যা দিল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। বিবৃতি জারি করে জানানো হল, অসৎ উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মিত্র টুইটারে মোদীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ভারতীয় ভূখণ্ডে কেউ ঢোকেনি, কোনও বেদখল হয়নি। তা হলে কেন উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা? কেনই বা সেনা এবং কূটনৈতিক পর্যায়ের আলোচনা? প্রাণ গেল সেনার কেন?’ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, ‘১৫ জুন সর্বদল বৈঠকে গলওয়ানে ২০ জন জওয়ানের মৃত্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় আমাদের ভূখণ্ডে চিনের কোনও অস্তিত্ব নেই। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় লঙ্ঘন নিয়ে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, গত ১৫ জুন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পরিকাঠামো তৈরির চেষ্টা করছিল চিন। তারা নিষেধ শোনেনি। ১৬ বিহার রেজিমেন্ট সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে। নিয়ন্ত্রণরেখায় লঙ্ঘনের চেষ্টাও সফল হয়নি ওইদিন।’
কিন্তু বিতর্ক তার পরেও থামানো যায়নি। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত মোদীর মন্তব্যের একটি ক্লিপ জুড়ে দিয়ে শনিবার টুইটারে প্রশ্ন তুলেছেন, আমাদের সেনাদের কেন নিহত হতে হয়েছিল? তাঁরা কোথায় নিহত হয়েছিলেন?
গালওয়ান উপত্যকার ঘটনার পর বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছিল, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থান করার চেষ্টায় ছিল চিন। তাই সংঘাত বাধে। বিরোধীদের খটকা লাগছে ঠিক এই জায়গাতেই। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম টুইট করেন, নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে চিনের সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডে না ঢুকলে কেন পুনরুদ্ধারের কথা বললেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর? প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ‘কেউ ঢোকেনি’ অথবা ‘কোনও চৌকি দখল হয়নি’ জাতীয় মন্তব্য নিয়েই বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন উত্থাপন করছে। কারণ গত সোমবার রাতে লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় চিনের সেনার আক্রমণে এক কর্নেল–সহ ২০ জওয়ানের শহিদ হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
