রবিবার সকালে দিল্লির গুরুদ্বারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হঠাৎ হাজিরা। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল না। আচমকা দিল্লির রকাবগঞ্জ সাহিব গুরুদ্বারে হাজির হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লির সন্নিকটেই চলছে কৃষকদের আন্দোলন। তখন প্রধানমন্ত্রীর গুরুদ্বার–দর্শন কী শিখ পাঞ্জাবিদের মন গলানোর চেষ্টা? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সেখানে তিনি গুরু তেগ বাহাদুরের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। শনিবারই তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। আম দর্শনার্থীর মতোই এদিন রকাবগঞ্জ গুরুদ্বারে যান মোদী। সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য গুরু তেগ বাহাদুরকে শ্রদ্ধা জানান। সরকারি সূত্রে খবর, গুরুদ্বার রকবগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর আসার কোনও আগাম খবর ছিল না। তাই তাঁর সফরকে ঘিরে কোনও পুলিশি বন্দোবস্ত ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী আম আদমির মতোই হাজির হন গুরুদ্বারে। আগে থেকে নির্ধারিত না থাকায় ট্রাফিক নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থাপনা ছিল না বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা। গুরুদ্বারে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ছবি তুলতেও দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। হাসিমুখে বিলিয়েছেন গ্রুপফি ও সেলফি। রাস্তায় ছিল না কোনো ব্যারিকেড। তাই গুরুদ্বারে প্রধানমন্ত্রীর আসার দরুন সাধারণ মানুষকে কোনও হ্যাপা পোহাতে হয়নি। তাঁদের স্বাভাবিক চলাফেরায় কোনও ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়নি।
এদিন টুইটারে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, রকাবগঞ্জ সাহিব গুরুদ্বারে সকালে প্রার্থনা করলাম। এখানে গুরু তেগ বাহাদুরজির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল। নিজেকে ধন্য মনে করছি। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের মতো উনি আমাকেও অনুপ্রাণিত করেছেন। গুরু তেগ বাহাদুর ছিলেন নবম শিখ গুরু। গুরু হরগোবিন্দর কনিষ্ঠ পুত্র তেগ বাহাদুর ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৬৭৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত গুরুর আসনে সমাসীন ছিলেন। অত্যাচারিত কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হয়ে লড়াই করতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয়েছিল গুরু তেগ বাহাদুরকে। ওরঙ্গজেবের নির্দেশে তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল দিল্লির চাঁদনি চক এলাকায়। তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল দিল্লির গুরুদ্বার রকাবগঞ্জে।
একমাস হতে চলল কৃষকরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিক্ষোভকারীদের কিয়দংশই পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষক। এই প্রেক্ষাপটে গুরুদ্বারে গিয়ে শিখদের বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী বলে মনে করছেন অনেকেই। তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এবং সেগুলি প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষকরা যখন ২৫ দিন ধরে লাগাতার আন্দোলন করছেন, দিল্লি প্রবেশের প্রায় সব রাস্তা বন্ধ করে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন, তখন হঠাৎ কেন গুরুদ্বার রকবগঞ্জে ছুটে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সকলের মনে।
