রাজস্থানের জয়সলমীরে ভারতীয় স্বশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানদের দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে নাম না করে ফের চিনকে হুমকি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই নিয়ে সাত বছর দীপাবলিতে ভারতীয় সেনার সঙ্গে কাটালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার জয়লসমীরের লঙ্গেওয়ালায় মোদী বলেন, ‘বিস্তারবাদী শক্তির জন্যে আজ দুনিয়া অস্থির হয়েছে। আগ্রাসী নীতি অষ্টাদশ শতাব্দীর মানসিক বিপন্নতাকে তুলে ধরছে। আপনারা আছেন তাই দেশ আছে। দেশের উৎসব আছে। পৃথিবীর কোনও শক্তি আমাদের সেনা জওয়ানদের সীমান্ত রক্ষায় বাধা দিতে পারবে না। পাহাড়ের চূড়ায় হোক, মরুভূমির প্রান্তরে অথবা ঘন জঙ্গলে, আপনাদের কর্তব্য, নিষ্ঠা, দায়িত্ব শৌর্য দেখে দেশবাসী অনুপ্রাণিত হয়।’
এদিন প্রধানমন্ত্রী জানান, কেউ যদি ভারতের ক্ষমতা পরীক্ষা করতে চায় তাকে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। ১৩০ কোটি ভারতীয় আপনাদের সঙ্গে রয়েছেন। প্রতিটি নাগরিক আমাদের জওয়ানদের শক্তি ও আত্মত্যাগের জন্য গর্বিত। তাঁরা গর্ব অনুভব করে আপনাদের অদ্যম মনোভাবের জন্য। আমাদের দেশের সীমান্ত রক্ষার কাজে নিয়োজিত বীর সৈনিকদের নিজেদের কর্তব্য করা থেকে পৃথিবীর কোনও শক্তিই আটকাতে পারবে না বলেও সাধারণ নাগরিকরা বিশ্বাস করেন। সেনা জওয়ানদের জন্য দীপাবলি উপলক্ষ্যে মিষ্টি উপহার দেন তিনি। আপনাদের মুখে হাসি দেখে আমারও উৎসবের আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যায়। প্রতিবারের মতো এবারও আমি প্রতিটি দেশবাসীর শুভকামনা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি। প্রতিটি দেশবাসীর ভালবাসা ও আশীর্বাদ নিজের সঙ্গে নিয়ে এসেছি। আজ আমি সেই সব মা ও বোনেদেরও শুভকামনা জানাচ্ছি যাদের প্রিয়জন উৎসবের সময়ও দেশের সুরক্ষায় সীমান্তে কর্তব্যরত। আপনাদের এই আত্মত্যাগ বিফলে যাবে না।
ভারত আগের থেকে অনেক বদলে গিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকের ভারতের নীতি খুব পরিষ্কার। গোটা বিশ্ব বুঝতে পেরেছে যে নিজের স্বার্থের বিষয়ে এই দেশ কোনও মূল্যেই সমঝোতা করবে না। আজকে ভারত জঙ্গিদের নিকেশ করছে আর তাদের নেতারা ঘরে ঢুকে পড়ছে। আপনাদের শক্তি ও দক্ষতার জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। আপনাদের দেশকে সুরক্ষিত রেখেছেন বলেই আন্তর্জাতিক মহল আজ আমাদের সম্পর্কে এই ধারণা পোষণ করে। তাই আত্মনির্ভর গড়ে উঠেছে। দেশবাসীও স্থানীয়ভাবে প্রতিরক্ষা সামগ্রী তৈরির বিষয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেছে।’
চিনের উদ্দেশে মোদী বলেন, ‘বিস্তারবাদী শক্তির জন্যে আজ দুনিয়া অস্থির হয়ে উঠেছে। আগ্রাসী নীতি অষ্টাদশ শতাব্দীর মানসিক বিপন্নতাকে তুলে ধরছে। ভারত এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে। দেশের স্বার্থের বিপরীতে যায়, এমন কোনও কিছুকেই সমর্থন করা হবে না। সেনার শক্তি এবং বীরত্বের কারণেই সারা বিশ্বে ভারতের খ্যাতি। ভারত অন্যকে বোঝার এবং তাদের বোঝানোর নীতিতে বিশ্বাসী। তবে সীমান্তে কেউ শক্তি পরীক্ষা করলে, ভারত তার যথাযথ উত্তর দিতে প্রস্তুত।’ জওয়ানদের তিনটি বিষয় মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, আপনাদের আমি তিনটি বিষয় মেনে চলার পরামর্শ দেব। এক, উদ্ভাবনী ক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গে আপনাদের চতুরতারও সাহায্য নিতে হবে। দুই, আপনাদের যোগাভ্যাস করতে হবে। আর তিন, মাতৃভাষার পাশাপাশি অন্য একটি ভাষা ও ইংরেজি শিখতে হবে। তাহলে নতুন দৃষ্টিকোণের বিকাশ হবে ও উৎসাহ বাড়বে।
