কেঁদে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের দলনেতা গুলাম নবি আজাদ–সহ বিদায়ী সাংসদদের জন্য বক্তৃতা করার সময় কেঁদে ফেললেন তিনি। কথা বলতে বলতে গলা ভারী হয়ে এল। বারবার থেমে যেতে হল তাঁকে। তবু আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না। মঙ্গলবারই রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাঁকে নতুন করে রাজ্যসভায় পাঠানোর কোনও ইঙ্গিতও কংগ্রেস দেয়নি। আজাদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে চোখ ভিজে এল প্রধানমন্ত্রীর। আবেগঘন গলায় রাজ্যসভার পাঁচবারের সাংসদকে বিদায় জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
‘প্রকৃত বন্ধু’ গুলাম নবি আজাদকে বারবার তিনি বললেন, ‘আপনার অবসর নেওয়া চলবে না।’ গুলাম নবি আজাদের রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই বলেন, ‘আমি চিন্তিত, গুলাম নবিজির পরে যিনি এই আসনে বসতে চলেছেন, তাঁকে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। কারণ, নবিজি শুধুমাত্র দলীয় আদর্শের প্রতিনিধি ছিলেন না, তিনি ছিলেন দেশের একজন প্রতিনিধি। তিনি রাজ্যসভা ও দেশকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিতেন। এটা ছোট ব্যাপার নয়, এটা অনেক বড় কথা। এখানে তর্ক–বিতর্ক যাইহোক, দলমত নির্বিশেষে এটা একটা পরিবার।’
এরপরেই চোখে জল চলে আসে মোদীর। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘সাংসদরা পরিবারের সদস্যদের মতো। তাঁদের এই ভবন ছেড়ে চলে যাওয়া মনে কষ্ট দেয়। তবে গুলাম নবি আজাদের মতো মানুষেরা সবসময় দেশের স্বার্থে তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে নানা পরামর্শ দেবেন, এই আশা রাখি। ওঁর নম্রতা, নিষ্ঠা, দেশের জন্য কিছু করার ইচ্ছা এই দেশের জন্য জরুরি। আমার বিশ্বাস যেখানে যে দায়িত্ব উনি পাবেন, সেটাই নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন, দেশ ওঁর থেকে উপকৃত হবে।’
কথা বলতে বলতেই মাঝে মধ্যে থেমে যাচ্ছিলেন তিনি। দু’একবার সম্মান জানানোর ভঙ্গিতে কপালে হাত তুলে স্যালুটও করতে দেখা গেল তাঁকে। গুলাম নবির মতো মানুষের এতদিন ধরে সংসদে তথা দেশের জন্য কাজ করে যাওয়াকে সম্মান জানালেন তিনি। ভাষণ শেষে মোদী বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কাজ করার জন্য আমি সাংসদদের ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই গুলাম নবি আজাদকে। আপনার পরামর্শ সংসদে সবসময় সাগ্রহে গ্রহণ করা হবে। মন থেকে মানবেন না যে আপনি রাজ্যসভার সদস্য নন। আপনার জন্য আমার রাস্তা সবসময় খোলা। আপনাদের অভিজ্ঞতা আমার কাজে লাগবে।’ আজ বিদায়ী ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর কান্না! ভারতের সংসদীয় ইতিহাসে বিরল নজির হয়ে থাকবে।