দেশ লিড নিউজ

‘‌বাংলার কৃষকরা বঞ্চিত রাজনৈতিক কারণে’‌

নতুন তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে অনড় কৃষকদের বিক্ষোভ–আন্দোলন পড়ল ৩০ দিনে। তারই মধ্যে শুক্রবার দেশের ৯ কোটি কৃষককে প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পে ১৮,০০০ কোটি টাকা বিলি করলেন নরেন্দ্র মোদী। কৃষকদের কথা, কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মোদী মূলত সমালোচনা করলেন দুটি রাজ্যের—পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরল। তবে মোদী কৃষি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
কৃষকদের সঙ্গে কথোপকথনের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী মোদী নতুন কৃষি আইন সম্পর্কে মিথ্যা ও গুজব ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিরোধীদের তীব্র নিন্দা করেন। তিনি জানান, কিছু লোক ভুল তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে। বলছে, আপনি যদি চুক্তি স্বাক্ষর করেন তা হলে বেসরকারি সংস্থাগুলি শুধু আপনার উৎপাদিত পণ্য নেবে না, তারা আপনার জমি নিয়ে নেবে! এত মিথ্যাচার। কিছু দল নতুন কৃষি আইনের বিরোধিতাকে রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা হিসেবে নিয়েছে।
এরপরই তিনি বলেন, ‘‌প্রধানমন্ত্রী কৃষক যোজনার সুবিধা দেশজুড়ে সমস্ত কৃষকেরা পাচ্ছেন, পাচ্ছেন না শুধু পশ্চিমবঙ্গের কৃষকেরা। আর সেটা পাচ্ছেন না সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে। পশ্চিমবঙ্গে লাখ লাখ কৃষক কেন্দ্রীয় সরকারের এই সুবিধা পাচ্ছেন না। পেতে দিচ্ছে না বাংলার সরকার। অথচ সেই সরকারই বাংলা থেকে দিল্লি এসে কৃষকদের আন্দেলনকে সমর্থন জানাচ্ছে! কৃষক সম্মান নিধি নিয়ে রাজনীতি করছে বাংলার সরকার।’‌
কৃষক আন্দোলন যখন চরমে তখন তিনি অভিযোগ করেন, আমি সমস্ত কৃষককে কিষান ক্রেডিট কার্ড এবং এর বিভিন্ন সুবিধাগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়ার অনুরোধ করছি। এতে স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়া যায়। আমি খুশি যে দেশজুড়ে কৃষকরা প্রধানমন্ত্রী–কিষান প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করছেন। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজনৈতিক কারণে এই প্রকল্প থেকে কৃষকদের এই সুবিধা থেকে দূরে রেখেছে। রাজনৈতিক কারণেই পশ্চিমবঙ্গে ৭০ লক্ষ কৃষক বঞ্চিত হচ্ছেন। বাংলার ২৩ লক্ষেরও বেশি কৃষক এই প্রকল্পের সুযোগ নিতে অনলাইনে আবেদন করেছেন। কিন্তু রাজ্য সরকার যাচাই প্রক্রিয়াটি অনেক আগেই বন্ধ করে দিয়েছে। আপনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কখনোই বাংলায় কৃষকদের জন্য আওয়াজ তোলেননি, তবে পাঞ্জাবের প্রতিবাদী কৃষকদের সমর্থন করছেন।
বাংলায় ২০২১ সালের ভোটের আগে এই ভার্চুয়াল বৈঠকের মঞ্চ ব্যবহার করে কৃষি ও কৃষক–প্রশ্নে বাংলার তৃণমূল সরকার এবং তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাপে রাখলেন মোদী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তার আগে অমিত মালব্য টুইটারে লেখেন, ‘আজ দেশের ৯ কোটি কৃষকের অ্যাকাউন্টে ১৮,০০০ কোটি টাকা পাঠাতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা বঞ্চিত হবেন। কারণ কেন্দ্রীয় সরকারকে তালিকা পাঠায়নি মুখ্যমন্ত্রী। পিসির অহংকারের পরিণতি কৃষকদের ভোগান্তি।’‌