করোনার আবহে দেশ থেকে জঙ্গিদের নাম মুছে ফেলার প্রবল পরিকল্পনা শুরু করেছে ইমরান খান সরকার। এই নিয়ে ভারতীয় গোয়েন্দারা একাধিক তথ্য আগেই পেশ করেছিলেন। এবার রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে ইমরান সরকারের এক জবাবদিহিতে তা ধরা পড়ে গেল। রাষ্ট্রপুঞ্জের মনিটরিং কমিটির একটি দল সম্প্রতি ইসলামাবাদে গেলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জঙ্গি সম্পর্কে যথেষ্ঠ তথ্য পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। ফলে তালিকায় যে সব নাম রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারেনি দেশ।
এদিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের ইউএনএসসি–১২৬৭ অনুযায়ী, পাকিস্তানে বসবাসকারী ১৩০ জন জঙ্গির তালিকা ইমরান সরকারকে অনুমোদন করে দেয় নিরাপত্তা পরিষদ। ১৩০ জন জঙ্গির মধ্যে এবার পাকিস্তান শুধুই ১৯ জনকে খুঁজে পেয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছে। বাকি জঙ্গিদের ইমরান সরকার খুঁজে পাচ্ছে না। এমনকী মার্চের শুরুতে যখন মনিটরিং দল পাকিস্তান পৌঁছয় তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের দেওয়া তালিকায় যাদের নাম উল্লেখ করা আছে তাদের জন্মের তারিখ, জাতীয়তা, ন্যাশনাল আইডি নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর বা কোনও নির্দিষ্ট ঠিকানার উল্লেখ করা নেই।
দিল্লির নর্থ–ব্লকের কাছে খবর পৌঁছেছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে পাকিস্তান জানিয়ে দিয়েছে জঙ্গিদের যে তালিকা সংগঠন তাদের দিয়েছে তাতে অর্ধেক জঙ্গির নাম আর জন্ম তারিখ, তাদের বৃত্তান্ত সঠিক নেই। তাই জঙ্গিদের খুঁজে বের করতে সমস্যা হচ্ছে পাকিস্তানের। ইসলামাবাদ অবশ্য এই তালিকা থেকে মাত্র ১৯ জন জঙ্গি উপস্থিতির কথা স্বীকার করেছে। তার মধ্যে রয়েছে লস্কর–ই–তৈবার প্রধান হাফিজ সইদ। পাকিস্তান রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদকে অনুরোধ করেছে ৬ জনের নামের পাশ থেকে সন্ত্রাসবাদী তকমা সরিয়ে নেওয়ার। সেই তালিকায় আছে মতিউর রহমান (লস্কর–ই–জাংভির প্রধান)।
অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরে পাকিস্তান ৩,৮০০ জন জঙ্গির নাম মুছে দিয়েছে। যে ঘটনার দিকে দিল্লির নর্থ–ব্লক কড়া নজর রেখেছে। পাকিস্তানের আশা এই কাজে তারা পাশে পাবে চিনকে। যেভাবে বহু বছর ধরে জৈশ প্রধান মাসুদ আজহারের নাম জঙ্গি তালিকাভুক্ত না করার ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে চিন সাহায্য করেছিল। পাকিস্তান অর্থ মঞ্জুরের মরিয়া চেষ্টায় আগে এফএটিএফ–এর ধূসর তালিকা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল। তখন ৭ হাজারের বেশি জঙ্গির নাম এফএটিএফ–এর সামনে পেশ করে। আর দেখায়—পাকিস্তান সরকার কীভাবে জঙ্গি দমনে ব্রতী। যাতে ধূসর তালিকা মুক্ত করে অর্থ মঞ্জুরের অধিকার দেয় এফএটিএফ। এখন সব জলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।