স্ত্রী অসুস্থ বলে যৌন লালসা মেটাতে নিত্যনতুন নারীতে আসক্ত হতো জোড়া প্রেমিকা হত্যাকাণ্ডে ধৃত দুই সন্তানের বাবা মহম্মদ আখতার। চারদিন ধরে ঘটনার তদন্ত চালিয়ে মাটিগাড়া থানার পুলিশ অনুমান করছে। পুলিশের সন্দেহ, ধৃতের টার্গেট ছিল মাদকাসক্ত মহিলারা। তাই আখতারের লালসার শিকার আরও কোনও মহিলা হয়েছে কি না তা নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যদিও ধৃত এখনও পর্যন্ত দু’টি খুনের ঘটনা পুলিশের কাছে কবুল করেছে।
মাটিগাড়ার শুটকি গোডাউনের কাছে আখতারের বাড়ি। কয়েক বছর আগে তুম্বাজোতের এক যুবতীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। পরে তাকে বিয়েও করে। তাদের দুই ছেলে রয়েছে। আখতারের আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলার পর পুলিশ জেনেছে, তার স্ত্রী অসুস্থ। ওদের মধ্যে দাম্পত্য কলহও ছিল। সম্ভবত তাই আখতার নিত্যনতুন মহিলায় আসক্ত হতো। প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ত। তারপর শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন। যৌন লালসা মেটার পর সে সহজেই পথের ‘কাঁটা’ প্রেমিকাকে ঠান্ডামাথায় খতম করত।
কয়েকজন মহিলার সঙ্গে ধৃতের সম্পর্ক ছিল বলে জানা গিয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর মাটিগাড়ার চামটা সেতুর কাছ থেকে এক তরুণী গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ওই মহিলাকে খুনের অভিযোগে আখতারকে গ্রেপ্তার করার পর সোমবার শুটকি গোডাইনের কাছ থেকে আরএক যুবতীর কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। ঘটনাগুলির তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সংশ্লিষ্ট দুই মহিলাই ছিল বিবাহিত। দু’জনেই মাদকাসক্ত ছিল। মদ, গাঁজা, ব্রাউন সুগার। এই নিয়ে ওদের পরিবারে ছিল অশান্তি। দু’জনের সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল আখতারের।
পুলিশ সূত্রে খবর, মাটিগাড়া থেকে নিখোঁজ হয়েছেনএমন মহিলাদের নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেইসব মহিলার কেউ আখতারের খপ্পরে পড়েছিল কি না তা জানার চেষ্টা চলছে। তাই থানার অফিসারদের নিয়ে বিশেষ একটি টিম গঠন করা হয়েছে। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের এসিপি (ওয়েস্ট) মণীশ যাদব বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে ধৃতের স্ত্রী বলেন, আমি অসুস্থ। সেভাবে আখতারের খোঁজ রাখতে পারতাম না। ও সবসময় বাড়িতে আসতও না। অনেক সময় নেশা করে গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকত। ওর সঙ্গে ঝগড়াও হতো। তাছাড়া নেশাগ্রস্ত কিছু মহিলার সঙ্গে আখতার ঘুরে বেড়ায় বলে এলাকার লোকের মুখে শুনেছি। জিজ্ঞাসা করলেই অশান্তি করত। বলতো লোকের কথা শুনবে না।
ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে ধৃতকে হাজির করে ওই মহিলা খুনের ঘটনা পুনর্নির্মাণ করেছে পুলিশ। ঘটনাগুলি পর্যালোচনা করার পর পুলিস অফিসারদের একাংশের ধারণা, আখতারের টার্গেট ছিল মাদকাসক্ত মহিলা। সম্ভবত সে ওই মহিলাদের নেশার টাকা এবং মাদক জোগার করে দিত। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের এসিপি (ওয়েস্ট) বলেন, খুনের ঘটনাগুলির তদন্তে বেশকিছু তথ্য মিলেছে। ধৃত ‘সিলিয়াল কিলারকে’ অনেকে ‘সাইকো’ বলেই মনে করছেন।