দীর্ঘ টালবাহানার পর রাজ্যে এসে পৌঁছল পদ্মার ইলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তর ২৪ পরগণার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের রূপালি শস্য নিয়ে ভারতে প্রবেশ করে দুটি ট্রাক। শুক্রবার সকাল থেকেই পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশের ‘রুপোলি শস্য’।
তবে ঘোষণার তুলনায় কম পরিমাণ ইলিশ পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, গতবছর দুর্গাপুজোর আগে বাংলাদেশ থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিভাগের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার গত ৩ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন,’দুর্গাপুজোর আগে ভারতে কোনও ইলিশ পাঠানো হবে না। ইলিশ অত্যন্ত সুস্বাদু মাছ। দেশের মানুষের চাহিদা মিটলে তারপরে রফতানির কথা ভেবে দেখা যাবে।’ প্রতি বছর যা সৌজন্য উপহার হিসেবে পাঠানো হত শেখ হাসিনার তরফে। ক্ষমতার হাতবদল হতেই ছেদ পড়তে চলেছিল এই রীতিতে। তা নিয়ে দুদেশের মধ্যে তৈরি হয়েছিল তিক্ত পরিবেশও।
আচমকাই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলে বাংলাদেশ। গত ২১ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক জানিয়েছিল, দুর্গাপুজোর আগে ভারতে ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ পাঠানো হবে। তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ৩ হাজার টন নয়, সাকুল্যে ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রফতানি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে ইলিশ সংগ্রহের পর মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, পরিমাণে কম হলেও এবারের ইলিশগুলি সাইজে বেশ বড়। ফলে দাম নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে আমজনতার মধ্যে।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, একেকটি ইলিশের ওজন ১ কেজির ওপরে। আবার মরসুমের শেষ ইলিশ হওয়ায় চাহিদাও তুঙ্গে। ফলে দাম বেশ বেশিই হবে। শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ি, কলকাতার বিভিন্ন বাজার, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা সহ রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে বিকোচ্ছে মরসুমের শেষ বাংলাদেশি ইলিশ। পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি ১৪৫০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে ইলিশের দাম। তবে জোগান এবং চাহিদার উপরে এই দাম ওঠাপড়া করতে পারে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মাছ বিক্রেতাদের মতে, দাম খানিকটা বেশি হওয়ায় সবাই খেতে পারবে নাকি সন্দেহ! এই মাছের দাম কতটা মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে, তা নিয়ে সংশয়ে মৎস্যবিক্রেতারা।