২০১১ সালে শুরু হয়েছিল। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত এমার মঠে সংস্কারের কাজ চলাকালীন দুই রাজমিস্ত্রিকে গ্রেপ্তার করে ঢেঙ্কানল থানা। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় দু’টো রুপোর বাট। প্রতিটির ওজন ৩০ কেজিরও বেশি। জানা যায়, মঠ থেকেই সেগুলি চুরি করেছিল তারা। কিন্তু রুপোর বাট এল কোথা থেকে? শুরু হয় গুপ্তধনের খোঁজ। ১৮ টন ওই সম্পদের তৎকালীন বাজারমূল্য ছিল ৯০ কোটি টাকা।
ওই মন্দিরের নীচে নাকি লুকিয়ে রয়েছে আরও মূল্যবান জিনিস। আরাধ্য দেবতা স্বয়ং রাম, লক্ষ্মণ এবং সীতা সেই সম্পদ পাহারা দিচ্ছেন। জনশ্রুতিতে ভর করে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ফের খননকার্য চালান প্রত্নতাত্ত্বিকরা। সেবার মেলে ৪৫টি রুপোর বাট। পাশাপাশি রুপোর গাছ, ১৬টি প্রাচীন তলোয়ার, ব্রোঞ্জের তৈরি গোরুর ভাস্কর্য–সহ নানা সামগ্রীও মিলেছিল।
অনুমান, ১০৫০ খ্রিস্টাব্দে রামানুজ আচার্য যখন পুরী এসেছিলেন, তখন এসব ধন-সম্পদ মাটির নীচে লুকিয়ে রেখেছিলেন। ইতিহাসবিদ অনিল ধীরের মন্তব্য, ‘ধান কেনার সময় রুপোর বাটে মঠগুলিকে দাম মেটাত ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। উদ্ধার হওয়া রুপোর বাট তারই অংশ বলে মনে হচ্ছে।’ এবার এমার মঠের মহন্ত নারায়ণ রামানুজ দাসের ইঙ্গিত, মাটির নীচে লুকিয়ে রয়েছে আরও সম্পদ। মেটাল ডিটেক্টরে তার অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে বলেও তাঁর দাবি। শেষমেশ তাঁর অনুরোধ মেনে ফের খননকার্য শুরু হয়। নেতৃত্বে জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ, পুরীর জেলাশাসক সমর্থ ভার্মা, জেলার পুলিস সুপার কে ভি সিং।
মহন্তের সাফ কথা, ‘মেটাল ডিটেক্টরে মাটির দেড় থেকে দু’ফুট নীচের ধাতুর অস্তিত্ব জানা যায়। আমাদের আরও গভীরে যেতে হবে। তবে সোনা বা হীরে আছে কি না, সেটা বলতে পারব না এখনই।’ এই ‘বিশ্বাস’-এ ভর করেই গুপ্তধনের খোঁজ চলছে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে।
