সোমবার গভীর রাতে কপিল সিববলের বাড়িতে বিজেপি বিরোধী জোটের জরুরি বৈঠক হল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন না গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্যই। তবে কংগ্রেসের অন্যান্য নেতা সহ বিরোধী শিবিরের বহু নেতাই উপস্থিত ছিলেন কপিল সিববলের বাড়িতে। রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে, তবে কী কংগ্রেসের অন্দরে ব্রাত্য হতে চলেছে গান্ধী পরিবার?
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের পর্যুদস্ত করতে তৎপরতা তুঙ্গে। তৃণমূল সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক দল একজোট হচ্ছে। সেখানে কংগ্রেসের ভূমিকা বলা বাহুল্য রাহুল গান্ধীর ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। সোমবার রাতে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা কপিল সিববলের বাড়িতে নৈশ ভোজে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন বিজেপি বিরোধী বহু নেতা। সিববলের বাড়িতে জড়ো হয়েছিলেন ছোট-বড় প্রায় সব দলের নেতারাই। সূত্রের খবর, এই বৈঠকেই একজোট হয়ে গান্ধী পরিবারের নেতৃত্ব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রায় সকলেই। ওই বৈঠকেই আওয়াজ উঠেছে, গান্ধী পরিবারের মুঠো থেকে বেরিয়ে না এলে বাঁচবে না কংগ্রেস, মাথা তুলে দাঁড়াবে না বিরোধী জোট।
জানা যাচ্ছে, এদিনের নৈশভোজে গান্ধী পরিবারের বিরোধী বা সমালোচক বহু কংগ্রেস নেতাই উপস্থিত ছিলেন সিববলের বাড়িতে। উল্লেখ্য, বেশ কয়েকদিন আগে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে যে ২৩ জন নেতা সনিয়া গাঁধীকে চিঠি দিয়েছিলেন তাঁদের বেশিরভাগই এদিন সিববলের বাড়িতে ছিলেন। অপরদিকে রাহুল, প্রিয়াঙ্কা ও সোনিয়া গান্ধীর কেউই আমন্ত্রিত ছিলেন না এখানে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এটাই গান্ধী পরিবারের প্রতি অনাস্থার নিদর্শন। সূত্রের খবর, শুধু কংগ্রেস নয়, বিরোধী জোটের অনেক নেতাই গান্ধী পরিবারকে দূরে সরিয়ে রাখার পক্ষে সওয়াল করেন এদিনের বৈঠকে।
জানা যাচ্ছে সোমবারের বৈঠকে তৃণমূলের তরফে হাজির ছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। যদিও এর আগে দিল্লি গিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখা করেছিলেন সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে। কিন্তু পরবর্তীতে কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের ডাকা বৈঠকে রাহুল গান্ধী থাকায় তৃণমূলের কোনও সাংসদ উপস্থিত থাকেননি। ফলে ধরে নেওয়া যায় গান্ধী পরিবারের প্রতি ধীরে চলো নীতি নিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। কিন্তু অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দল একটাও রাখঢাক রাখেনি। সোমবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কৃষি আইন নিয়ে বিজেপি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা অকালি দলের নরেশ গুজরাল। ছিলেন নবীন পট্টনায়কের বিজু জনতা দলের নেতা পিনাকি মিশ্র। পাশাপাশি ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লার বক্তব্য ছিল, কংগ্রেস মজবুত হলে তবেই বিরোধী জোটের হাত শক্ত হবে। তিনিও ছিলেন ওই বৈঠকে।
সোমবারের বৈঠকে ছিলেন পি চিদম্বরম, শশী তারুর এবং আনন্দ শর্মা। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা লালুপ্রসাদ যাদব, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির নেতা শরদ পওয়ার, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি, শিবসেনার সঞ্জয় রাউত, ডিএমকে-র তিরুচি শিবাও। ফলে বোঝাই যাচ্ছে কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী দলের নেতৃত্বে বড়সড় রদবদল হতে চলেছে। সোনিয়া গান্ধী অসুস্থ, তাই তিনি সামনের সারিতে নেই। আর রাহুল-প্রিয়াঙ্কার নেতৃত্ব নিয়ে সংশয় রয়েছে, ফলে বিরোধী নেতারা এবার গান্ধী পরিবারের বিকল্প চাইছেন মোদী-শাহর বিরুদ্ধে লড়াই দিতে।
You must be logged in to post a comment.