উত্তরপ্রদেশ–দিল্লি সীমানার গাজিপুরে আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়লেন বিরোধী নেতা–নেত্রীরা। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এই দলে ছিলেন তৃণমূলে কংগ্রেসের সাংসদ সৌগত রায়, এনসিপি’র সুপ্রিয়া সুলে, ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি এবং শিরোমণি অকালি দলের সাংসদ হরসিমরৎ কাউর বাদল–সহ বিরোধী দলের একাধিক নেতা।
মূল ধরনা মঞ্চ থেকে দেড় কিলোমিটার আগে আটকে দেওয়া হয় তাঁদের। আটকে দেওয়া হয় সংবাদমাধ্যমকেও। সমস্ত বিরোধী দলগুলির তরফে আজ গাজিপুরে কৃষকদের ধর্ণা মঞ্চে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু গাজিপুরে প্রবেশের মুখে প্রথম ব্যারিকেড জোর করে পেরলেও, দ্বিতীয় ব্যারিকেড থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয় বিরোধী নেতাদের। ধর্ণা মঞ্চে যেতে বাধা দেওয়া হয়।
গাজিপুরের সীমানা রীতিমতো ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তারক্ষীরা। কৃষকদের রুখতে ৩১ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী এবং ১৬ কোম্পানি র্যাফ নিয়োগ করা হয়েছে। মাটিয়ে পুঁতে রাখা হয়েছে পেরেক। কিন্তু বিরোধী সাংসদদের গাজিপুর পৌঁছনোর আগেই মাটিতে পোঁতা পেরেক তোলার প্রক্রিয়া শুরু করে প্রশাসন।
পুলিশের দাবি, ধর্ণা মঞ্চে যাওয়ার জন্য কোনও আগাম অনুমতি নেওয়া হয়নি। বিরোধীদের পাল্টা অভিযোগ, সেখানে যে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতারা যেতে পারবেন না, এমন কোনও নির্দেশিকা প্রশাসনের তরফে ইস্যু করা হয়নি। তাঁরা কোনও আগাম অনুমতির আবেদনও জানাননি।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ দেখা করতে না দেওয়া ক্ষোভ উগরে দেন হরসিমরৎ। সংবাদসংস্থা এএনআই–কে বলেন, ‘কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি, যাতে সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যায়। কিন্তু স্পিকার বিষয়টি উত্থাপন করতে দিচ্ছেন না আমাদের। তাই আমরা পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে এসেছি।’
উল্লেখ্য, ২৮ জানুয়ারি দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াও যান ধর্ণা মঞ্চে। তাহলে আজ কেন বিরোধী নেতৃত্বের প্রতিনিধি দলকে যেতে বাধা দেওয়া হল? মাঝপথে আটকে দেওয়া হল? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কৃষকরা বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি এবং শনিবার ‘চাক্কা জ্যাম’–এর হুঁশিয়ারি দেওয়ায় গাজিপুর, টিকরি এবং সিঙ্ঘু সীমানায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।
এই ঘটনায় কড়া তোপ দেগে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘সংসদের অভ্যন্তরে কৃষকদের দুরবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে দিচ্ছে না। আজ আমাদের দেখাও করতে দিল না। আমরা স্পিকারকে জানাব এখানে কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি চলছে। সরকার অসভ্য আচরণ করছে। এখানে ব্যারিকেড দিয়ে, কাঁটাতার দিয়ে, পেরেক পুঁতে আটকানো হচ্ছে। কোনও সভ্য দেশে এসব হয় না।’