আন্তর্জাতিক

করোনায় এখনও পর্যন্ত ভুটানে মৃত ১!‌

একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে জঙ্গল। সরকার নয়, রাজাই এখনও সে দেশের শেষ কথা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে হোটেলের ঘরের মাপ, সবই ঠিক হয় রাজদরবারে নেওয়া সিদ্ধান্তে। হ্যাঁ, দেশটির নাম ভুটান। এই ভুটান যে বিশ্বপ্লাবী করোনাকেও দমিয়ে দিতে পেরেছে, সে খবরটাও ঠিক এতটা স্পষ্ট করে জানা ছিল না হয়তো। ভয়ানক দুই–ঢেউ বিষাক্ত করোনায় সে দেশে আজ পর্যন্ত মারা গিয়েছেন মাত্র একজন! অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব।
জিগমে ওয়াংচুকের আমলে ভুটান অনেক উন্নতি করেছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে দুই প্রতিবেশী দেশের তুলনায় অনেক বেশি সফল ভুটানের রাজা। ভারতে তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তানেরও অবস্থা একইরকম। কিন্তু কোভিড মানচিত্রে অন্যতম বিরল দেশ ভুটান। সেখানে এখনও মৃতের সংখ্যা ১। জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখে এক চৌত্রিশ বছরের যুবক লিভার ও কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে থিম্ফুর এক হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত মারা গেলেন করোনায়! ভুটানের এই প্রথম মৃত্যু। এই মহামারীতে এখনও পর্যন্ত ভুটানে করোনা থেকে ওই একটিই মৃত্যু।
ভুটানে রয়েছেন মোট ৩৩৭ জন চিকিৎসক, ৩ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁরাই জয় নিশ্চিত করে ফেলেছে ভুটান। কারণ প্রশাসনিক পরিকল্পনা। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চিনে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। ভুটান করোনার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে। শুরু হয় লক্ষণের ভিত্তিতে পরীক্ষা। মার্চ মাসের ৬ তারিখে ভুটানে প্রথম আক্রান্তের খবর মেলে। তার ৬ ঘণ্টা ১৮ মিনিটের মধ্যে আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ৩০০ জনকে চিহ্নিত করে পরীক্ষা শুরু হয়। পাঠানা হয় নিভৃতবাসে।
ভুটানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১১। একটি ছোট্ট দেশ ভুটান, যারা মূলত পর্যটনের উপর নির্ভরশীল, তারা কীভাবে করোনাকে রুখে দিল, তা জানতে এমনকী উৎসুক আমেরিকাও। অবশ্য শুধু ভুটান নয়, ভিয়েতনাম, রাওয়ান্ডা, সেনেগালের মতো দেশও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে করোনা সংক্রমণ। প্রায় সমস্ত জিম, রেস্তরাঁ, শপিং মল বন্ধ করে দেওয়া হয়। মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারে করা হয় কড়াকড়ি। যাঁরা বিদেশ থেকে এসেছিলেন, তাঁদের জন্য সরকারি খরচে থাকার ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কোনও উপসর্গ দেখা দিলেই যাতে সঙ্গে সঙ্গে সরকারি কোয়রান্টিন সেন্টারে যাওয়া যায়, তার ব্যবস্থাও করা হয়।