করোনা বেশ কড়া প্রভাব ফেলেছে পদ্মাপারে। তাই লকডাউনের পথে হাঁটতে হয়েছে। কিন্তু এই মাসের পর কী হবে? সবার মনেই এখন এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জানা গিয়েছে, শর্তসাপেক্ষে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সীমিত আকারে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিসগুলি নিজ ব্যবস্থায় খোলা থাকবে। শর্ত মেনে সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী জলযান এবং রেল চলাচল করতে পারবে। নিজ ব্যবস্থাপনায় বিমান চলাচলের বিষয়ে বিমান কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে। আর বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
আজ বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ জারি করেছে বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ। বুধবারই সরকারের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানা গিয়েছিল। করোনার কারণে দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর অফিস–আদালত খুলছে। গত ২৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশে সাধারণ ছুটি চলছে। ইতিমধ্যেই সাত দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়। এই পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে ছুটি আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশ অনুযায়ী, সীমিত আকারে অফিস খুললেও আগামী ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মানতে হবে বেশ কিছু নির্দেশনা। এক জেলা থেকে আর এক জেলায় জনসাধারণের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। প্রতিটি জেলার প্রবেশ ও বেরিয়ে আসার পথে চেকপোস্ট ব্যবস্থা থাকবে। রাত আটটা থেকে পরদিন সকাল ছয়টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। হাটবাজার, দোকানপাট এবং শপিং মল বিকেল চারটার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। কেনাবেচার সময় পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা এবং জরুরি পরিষেবা যেমন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্প পণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, কর্মী, ওষুধ–সহ চিকিৎসা সরঞ্জাম বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, গণমাধ্যম এবং ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের কর্মীরাও এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবেন।
অন্যদিকে ওষুধশিল্প, কৃষি, উৎপাদন এবং সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলি, উৎপাদন ও রপ্তানিশিল্প–সহ সব কলকারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে চালু রাখতে পারবে। গত ২৬ এপ্রিল থেকেই রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা চালু হয়েছে। এখন অনলাইন কোর্স বা দূরশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা পূর্ণভাবে চালু করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক নির্দেশ দেবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদগুলিতে সর্বসাধারণের নমাজ পাঠ এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠান অব্যাহত থাকবে।