ঘূর্ণিঝড় আমফান তছনছ করে দিয়ে গিয়েছে। ফলে থমকে গিয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। চার দিন হতে চলল, এখনও স্তব্ধ রাজ্যের বহু এলাকা। বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ। বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ, জল, টেলি পরিষেবা। যার ব্যতিক্রম নয় হুগলির ভদ্রেশ্বরের চাঁপদানি পুরসভা এলাকা। এখানে এখন কিছুই নেই বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। জল নেই। বিদ্যুৎ নেই। ইন্টারনেট পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। ফলে নেই যোগাযোগও। রাস্তায় উপড়ে পড়েছে বড় বড় গাছ। ফলে রাস্তা দিয়ে যাবার উপায় নেই।
বুধবার ঘূর্ণিঝড় আমফান আছড়ে পড়েছিল। আর আজ শনিবার। কিন্তু এখনও চাঁপদানি পুরসভায় এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। চারদিন হতে চলল বিদ্যুৎহীন বিভিন্ন এলাকা। বিদ্যুৎ নেই, তাই জলও নেই। এলাকায় জলকষ্ট চরম আকার ধারণ করেছে। জলের অভাবে অনেকেই গঙ্গায় স্নান করতে যান। এই পরিস্থিতিতে চাঁপদানি পুরসভা এলাকায় দ্রুত পরিষেবা ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ সকাল ৮টা থেকে চাঁপদানি সরকারি আবাসনের সামনে জিটি রোড অবরোধ করে রাস্তায় বসেছেন বাসিন্দারা। রাস্তায় গাছের ডাল ফেলে রেখে চলছে বিক্ষোভ। ঝড়ের পর থেকেই আবাসনে বিদ্যুৎ নেই। জল নেই। চূড়ান্ত দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন মানুষ। শিশু থেকে বয়স্ক, বিক্ষোভে সামিল হয়েছে সবাই। রাস্তায় গাছ ফেলে মহিলারা বসে পড়েছেন।
একই পরিস্থিতি উত্তর ২৪ পরগণার হাবড়া পুর এলাকাতেও। আজ তিন দিন পার হয়ে গেল অথচ অধিকাংশ এলাকাতেই এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। ফলে একদিকে যেমন গরম তেমনি জল কষ্ট শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় খাবার জলের পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে গেছে। এখনও গাছ পরে আছে বিভিন্ন এলাকায়। সব জায়গাতেই নিজেদের উদ্যোগে গাছ কাটতে হচ্ছে। পুরসভার তরফে কোথাও গাছ কেটে রাস্তা পরিস্কার করা হয়নি বলে অভিযোগ। শুরু হয়েছে বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ। হাবড়ায় যে আদৌ কোন পুরসভা আছে তাই বুঝতে পারছেন না সাধারণ মানুষ।
করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন চলায় গরীব, দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছিল। আর এখন আমফানের পর মাথার উপর সামান্য ছাউনিটুকুও থাকল না। হাবড়ার উত্তর হাবড়া আদিবাসী পাড়া, রেল বস্তি, আটুলিয়া,জিওলডাঙ্গা আদিবাসী পাড়ায় অধিকাংশ ঘর ভেঙে পরেছে। অথচ আজ পর্যন্ত একটি ত্রিপল ও পায়নি তাঁরা। রাত কাটছে খোলা আকাশের নীচে। সামান্য সাহায্য যোগার করে চেষ্টা চালাচ্ছে মাথার উপর আকাশ ঢাকার।