দেশ লিড নিউজ

জালনোট কারবারি এনআইএ’‌র জালে

ঘুরে ঘুরে ফল ও সবজি ফেরি করত সরিফুল। ক্রেতাদের সঙ্গে তার কথাবার্তাও ছিল মোলায়েম। তার এই বিনয়ী আচরণের জন্যই দিনে দিনে ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছিল। জমে উঠছিল ব্যবসা। কিন্তু কথায় আছে, পাপ বাপকেও ছাড়ে না। অবশেষে বরানগরেই এনআইএ’র জালে ধরা পড়ল জালনোট পাচার চক্রের অন্যতম চাঁই সরিফুল ইসলাম। তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা এই উত্তর শহরতলির শীতলামাতা লেন থেকে তাকে পাকড়াও করে।

লখনউয়ে জালনোট পাচারের অন্যতম পান্ডা সরিফুলের বাড়ি মালদহের বৈষ্ণবনগরে। তাকে দীর্ঘদিন ধরেই কিছুদিন ধরেই খুঁজছিলেন এনআইএ’র আধিকারিকরা। মঙ্গলবার অভিযুক্তকে কলকাতায় এনআইএ’র বিশেষ আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে সাতদিনের ট্রানজিট রিমান্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশের পরই তদন্তকারীরা সরিফুলকে নিয়ে লখনউয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।

এনআইএ’র বিশেষ সরকারি আইনজীবী দেবাশিস মল্লিক চৌধুরী বলেন, ‘‌২০১৯ সালে লখনউয়ে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার জালনোটের মামলায় মালদহের বাসিন্দা সরিফুল ছিল অন্যতম অভিযুক্ত। সেই মামলায় সেখানকার কোর্টে চার্জশিটও দাখিল হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ‘ফেরার’ সরিফুলের হদিশ পাচ্ছিলেন না তদন্তকারীরা। ফলে মামলার বিচার শুরু করা যাচ্ছিল না।’‌
এনআইএ সূত্রে খবর, গ্রেপ্তার এড়াতেই মালদহ থেকে বরানগরে এসে আত্মগোপন করেছিল বৈষ্ণবনগরের সরিফুল। প্রথমে কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও পেটের টানে বাধ্য হয়েই রাস্তায় নামে সে। এই জালনোট পাচারকারী পরিচয় গোপন করেই ওই এলাকায় ঘুরে ঘুরে ফল ও সবজি বিক্রি করতে শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে কখনও সন্দেহের চোখে দেখেননি। বরং আচার-ব্যবহারে খুশি হয়ে তার থেকেই জিনিস কিনতেন তাঁরা। ক্রমশ ব্যবসা বেড়ে ওঠে সরিফুলের।

মাঝেমধ্যেই সে মালদহের বাড়িতে টাকাও পাঠাত। এদিকে বিভিন্ন সোর্স মারফত এনআইএ’র তদন্তকারীরা জানতে পারেন, জালনোট পাচারের এই অন্যতম পান্ডা লুকিয়ে রয়েছে বরানগরে। সমস্ত তথ্য হাতে পাওয়ার পর উত্তরপ্রদেশের এনআইএ আধিকারিকরা কলকাতার অফিসে যোগাযোগ করেন। পাঠানো হয় অভিযুক্তের ছবি ও তার বায়োডেটা। সেই সূত্র ধরেই সোমবার গভীর রাতে বরানগরের একটি বাড়ি থেকে সরিফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে চারটি মোবাইল ফোন ও ছ’টি সিম কার্ড। ওই সমস্ত ফোনের যাবতীয় কল-লিস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে।