এবার বাংলাদেশ ভ্রমণে নয়া চমক। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ট্রেনে চড়ে সোজা পৌঁছে যাওয়া যাবে ঢাকা। মৈত্রী এবং বন্ধন এক্সপ্রেসের পর এবার পশ্চিমবঙ্গ–বাংলাদেশকে জুড়তে চলেছে আরও একটি ট্রেন। দ্বিসাপ্তাহিক এই ট্রেনটি আগামী ২৬ মার্চ থেকে চালু হয়ে যাবে বলে ঠিক হয়েছে। দুপুর ২টো নাগাদ নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছেড়ে বাংলাদেশের চিলাহাটি সীমান্ত পেরিয়ে সৈয়দপুর, পার্বতীপুর, ঈশ্বরদি, টাঙাইল হয়ে ট্রেনটি রাত ১১টা নাগাদ পৌঁছবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে।
আবার রাত ১টা নাগাদ ফেরার পথে রওনা হয়ে পরদিন সকাল ৭টা নাগাদ নিউ জলপাইগুড়িতে আসবে। পূর্ববঙ্গে পিতৃপুরুষের ভিটে ছিল এমন কয়েক লক্ষ মানুষ বর্তমানে উত্তরবঙ্গে বসবাস করেন, যাঁদের পাসপোর্ট ভিসা করার পর চ্যাংরাবান্ধা অথবা ফুলবাড়ি হয়ে কাস্টমস, ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে নাকানি চোবানি খেয়ে বাংলাদেশে যাতায়াত করতে হয়। তাঁরা এবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনেই এই দুই পর্ব মিটিয়ে ট্রেনে চড়লে পৌঁছে যাবেন বাংলাদেশে।
এই বিষয়ে উত্তর–পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহারের ডিআরএম রবীন্দ্রকুমার ভার্মা বলেন, ‘এই ট্রেনটি চালুর দুটি উদ্দেশ্য। এক, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও উন্নতি। দুই, এই ট্রেনটির মাধ্যমে উত্তরবঙ্গে আরও বেশি করে বাংলাদেশের পর্যটকদের নিয়ে আসা।’ বাংলাদেশের পাকসে’র ডিআরএম সহিদুল ইসলাম জানান, ভবিষ্যতে আমরা নিউ জলপাইগুড়িকে কেন্দ্র করে ভুটান এবং নেপালের সঙ্গেও রেল যোগাযোগ গড়ে তুলতে চাই। এই ট্রেনটির মাধ্যমে সেই লক্ষ্যে একধাপ এগোলাম বলা যেতে পারে। এবার বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী। সুবর্ণ জয়ন্তীকে স্মরণীয় করতে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দেশের রেল যোগাযোগ তৈরির জন্য প্রায় বছর ধরে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছিল বাংলাদেশ সরকার।
বুধবার আলোচনার শেষে ২৬ মার্চ থেকে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। আপাতত সোমবার ও বৃহস্পতিবার নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ট্রেনটি ছাড়বে। বাংলাদেশ থেকে নিউ জলপাইগুড়ির উদ্দেশ্যে পৌঁছবে মঙ্গলবার ও শুক্রবার। ট্রেনের ভাড়া ঠিক হয়নি। সেটা নিয়ে মার্চের প্রথম সপ্তাহেই ফের বৈঠকে বসবেন দুই দেশের রেল কর্তারা। পর্যটকদের পছন্দের কথা মাথায় রেখে ট্রেনে কোনও সাধারণ কামরা থাকবে না। ছয়টি এসি টু–টায়ার, দুটি চেয়ার কার এবং ছয়টি স্লিপার কোচ থাকবে। ট্রেনের নামও ২৬ মার্চের আগে দুই দেশের আলোচনায় চূড়ান্ত হবে। এই ট্রেনটি হবে নন–স্টপ। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে রওনা হওয়ার পর একেবারে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টেই যাত্রীরা নামতে পারবেন। মাঝে চিলাহাটিতে ট্রেনটি কয়েক মিনিটের জন্য দাঁড়াবে ট্রেনের চালক, গার্ড ইত্যাদি বদলের জন্য।