করোনাভাইরাসের জেরে বিগত ১৫ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে স্কুল–কলেজ। বাড়িতে থেকে অনলাইনে পড়াশুনার উপর জোর দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। লাফিয়ে বাড়ছে স্কুলছুটের সংখ্যা। উদ্বেগজনক চিত্র ধরা পড়েছে বিজেপি শাসিত হরিয়ানায়। রাজ্যে বেসরকারি স্কুলের সাড়ে ১২ লক্ষ পড়ুয়া চলতি শিক্ষাবর্ষের জন্য নাম নথিভুক্ত করেনি। এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে শিক্ষাদপ্তর।
হরিয়ানায় ১৪ হাজার ৫০০ সরকারি স্কুল রয়েছে। বেসরকারি স্কুলের সংখ্যা ৮ হাজার ৯০০টি। বেসরকারি স্কুলের তথ্য অনুযায়ী, গত শিক্ষাবর্ষে নাম নথিভুক্ত করেছিল ২৯ লক্ষ ৮৩ হাজার পড়ুয়া। তিন মাস আগেই ২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। ২৮ জুন পর্যন্ত নাম লিখিয়েছে ১৭ লক্ষ ৩১ হাজার ছাত্রছাত্রী। অর্থাৎ গত বছরের থেকে এবার পড়ুয়ার সংখ্যা কমেছে ১২ লক্ষ ৫০ হাজারের বেশি। নিয়ম অনুযায়ী, একটি স্কুল থেকে অন্য স্কুলে ভর্তি হতে গেলে লিভিং সার্টিফিকেট নিতে হয়। কিন্তু, এক্ষেত্রে তেমন পড়ুয়ার সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সাড়ে ১২ লক্ষের একটা বড় অংশই স্কুলছুট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্কুল শিক্ষাদপ্তর।
এক আধিকারিকের কথায়, এই ঘটনার নেপথ্যে অনেকগুলি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম হল করোনা পর্বে দীর্ঘ লকডাউন। ফলে প্রচুর মানুষ কাজ হারিয়েছেন। সন্তানদের জন্য বেসরকারি স্কুলে খরচ সামলানো তাঁদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই অনেক অভিভাবক ছেলে–মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করেনি। স্কুলের অতিরিক্ত ফি-ও একটা বড় ইস্যু। লকডাউনে আয় কমে যাওয়ায় অভিভাবকরা হয়তো বাচ্চাদের বেসরকারি থেকে ছাড়িয়ে সরকারি স্কুলে ভর্তি করেছেন।
যদিও এই যুক্তি মানতে চাননি ফতেহাবাদ গ্রামের একটি বেসরকারি স্কুলের কর্তা। তাঁর বক্তব্য, এই বছরও আর স্কুল খুলবে না বলে একটি ধারনা তৈরি হয়েছে। তার জেরেই বেশ কিছু বেসরকারি স্কুলের জুনিয়র ক্লাসের পড়ুয়ারা এবার নাম লেখায়নি। পাশাপাশি, ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় সরকারি স্কুলের প্রচারকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে বহু বেসরকারি স্কুল।