স্বাস্থ্য

বিশ্বের প্রায় ১৭০ কোটি মানুষ রয়েছেন করোনা ঝুঁকিতে

বিশ্বের প্রায় ১৭০ কোটি বা এক-পঞ্চমাংশ মানুষের অন্তত একটি দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা আছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। ব্রিটিশ এক মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত নিবন্ধে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ-এ সোমবার প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ইউরোপের মতো তুলনামূলকভাবে বেশি বয়স্ক মানুষের অঞ্চলে এবং আফ্রিকার মতো এইচআইভি/এইডস-এর উচ্চ প্রবণতার অঞ্চলে করোনাভাইরাস মহামারীর ঝুঁকি বেশি। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেব অনুযায়ী বিশ্বে ৮০ লাখের বেশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা গেছে। মারা গেছে ৪ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি। বিভিন্ন দেশের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মৃতদের সিংহভাগই বয়স্ক মানুষ।

১৮৮টি দেশের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষকরা ধারণা পেয়েছেন, বিশ্বে সত্তরোর্ধ্ব জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা ফুসফুসের রোগের মতো কোনো না কোনো দীর্ঘমেয়াদী রোগে ভুগছেন। তারা নতুন করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে এলে অনেক বেশি ঝুঁকিতে থাকবেন। অন্যদিকে কাজ করতে সক্ষম এমন বয়সীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী রোগ আছে ২৩ শতাংশের। আর ২০ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে তা ৫ শতাংশ। ওই নিবন্ধের অন্যতম লেখক লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের অ্যান্ড্রু ক্লার্কের মতে, এই সংখ্যাগুলো লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করার পথে থাকা দেশগুলোর কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে পারে।

“দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা থাকা মানুষদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিতে অথবা ভবিষ্যতে টিকা দেওয়ার জন্য তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে এটি কাজে লাগানো যায়।” মহামারীর প্রথম থেকেই গবেষকরা জানতেন, কোনো রোগ থাকলে বয়স্কদের করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তবে ড. ক্লার্কের মতে, এখন আরও ভালোভাবে সংখ্যাগুলো নিয়ে ধারণা পাওয়া যাবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের স্বাস্থ্য দপ্তরগুলো থেকে তথ্য নিয়ে গবেষকরা ১১টি ক্যাটাগরিতে দীর্ঘমেয়াদী রোগগুলোকে ফেলেছেন যেগুলো থাকলে কোভিড-১৯ এ কেউ গুরুতর অসুস্থ হতে পারেন। অটোইমিউন ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও এই তালিকায় আছেন, যারা নিয়মিত ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ খান। তালিকায় কেমোথেরাপির মত চিকিৎসা নেওয়া রোগীরাও আছেন।

এ গবেষণায় যে ধারণা পাওয়া গেছে, তাতে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বিশ্বের প্রায় ৪ শতাংশ মানুষ বা প্রায় ৩৪ কোটি মানুষের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে। কোনো দীর্ঘমেয়াদী রোগ নেই এমন সুস্থ বয়স্ক ব্যক্তিদের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করা হয়নি এ গবেষণায়। দারিদ্র্য ও স্থূলত্বের মতো ঝুঁকির কারণগুলোও বাদ রাখা হয়েছে।