রাজ্য

নেচার জার্নালে বাঙালি গবেষক

রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু সংক্রান্ত রিপোর্টে বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে ভয়ের তথ্য মিলেছে। উষ্ণায়নে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে মানুষের সৃষ্ট তাপ। যার উৎপন্ন হয় শিল্প থেকে। শিল্পবর্জ্য হিসেবে তাপ খুব একটা গুরুত্ব পায় না। তবে, সেটা পরিবেশে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। এই বর্জ্যতাপ থেকেই সুলভে বিদ্যুৎ তৈরির হদিশ দিয়েছেন বারাকপুরের ছেলে প্রীতম সাধুখাঁ। জাপানের কিয়ুশু বিশ্ববিদ্যালয়ের মেটেরিয়াল সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে এই অসাধ্য সাধন করেছেন রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনের এই কৃতী। বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান প্রকাশনা সংস্থা নেচারের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে সেই গবেষণাপত্র।

জেনারেটর থেকে শুরু করে ইঞ্জিন, ব্রয়লার বা ফার্নেস চললে তাপ উৎপন্ন হবেই। সেই তাপ কোনও কাজে লাগে না। তাই সেটি বর্জ্য হিসেবে গণ্য হয়। এই তাপ মাথাব্যথার কারণ। এই তাপকে পুনর্ব্যবহারের কোনও বিকল্প জানা ছিল না। এই জায়গাতেই সাফল্য প্রীতমদের। কোবাল্ট এবং লোহার সঙ্গে কিছু জৈব যৌগ মিশিয়ে পাইরো ইলেকট্রিক ক্রিস্টাল বা কেলাস বানিয়েছেন তাঁরা। সেটাকে জুড়ে দিয়েছেন একটি সার্কিটের সঙ্গে। এতে ব্যবহার হয়েছে ন্যানোপ্রযুক্তি। তার নাম দেওয়া হয়েছে পাইরো-ইলেকট্রিক ন্যানোজেনারেটর। পাইরো ইলেকট্রিসিটি হল তাপশক্তিকে বিদ্যুতে রূপান্তরের ঘটনা।

এই বিষয়ে প্রীতম বলেন, ‘‌প্রয়োজনে বাল্বের পরিবর্তে ব্যাটারি রেখে দিলে সেটাও চার্জ দেওয়া যাবে। যন্ত্রটির পেটেন্ট নেওয়ার পথে’‌। এই প্রযুক্তির আরও একটি দিক হল মিনিয়েচারাইজেশন। এই বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, আধ মিলিমিটার দৈর্ঘের (একটি চালের দানার ভগ্নাংশ মাত্র) একটি কেলাসও বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। ঘরের সাধারণ তাপমাত্রাতেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে এই কেলাসের মাধ্যমে। এই পর্যায়ের কার্যকারিতার জন্য নেচারের মতো প্রকাশনা সংস্থা নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে গবেষণাপত্রটি ছেপেছে।